দেশের শিশুরা অধিকারবঞ্চিত, অমানুষিক নির্যাতনের শিকার : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন শিশুরা পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে, সুশিক্ষা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন গড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে দিবে এক নতুন বাংলাদেশ। কিন্তু আজ দেশের শিশুরা অধিকারবঞ্চিত, অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ। প্রতিনিয়ত শিশুর উপর চলছে পৈশাচিক নির্যাতন। যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আইডিইবি ভবনে জিয়া শিশু একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত ১১তম জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতা শাপলাকুঁড়ি-২০১৯ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক এম. হুমায়ুন কবির।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন সমাজ আমরা নির্মাণ করছি? যে সমাজে আমাদের ফুলের মতো শিশুগুলোকে আমরা ভালোবাসতে পারছি না। কোন সমাজ আমরা নির্মাণ করছি? যে আমাদের শিশুদের জন্য সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারছি না। তিনি বলেন, চতুর্দিকে একটি অনিশ্চয়তা, একটা অস্থিতিশীলতা, একটা ভয়-শঙ্কা কাজ করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যখন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন আমি যুবক ছিলাম। আজকে আমি প্রায় বৃদ্ধ। ৪৮ বছর হয়েছে প্রায় আমাদের স্বাধীনতার। এই স্বাধীনতার স্বপ্ন কিন্তু আমরা দেখিনি এ বাংলাদেশে। বাংলাদেশের এই চিত্র আমরা এটা আশা করিনি এবং সেই জন্য আমরা অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধও করিনি। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সত্যিকার অর্থে ‘একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে’ এই গানটিকে প্রেরণা হিসেবে সামনে রেখে। ফুল ফোঁটাতে চেয়েছিলাম আমরা। আমরা এমন একটি বাসযোগ্য ভূমি তৈরি করতে চেয়েছিলাম যেখানে আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে, আনন্দে বাস করতে পারব। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। যদি আমাদের অনেক রাস্তাঘাট তৈরি হয়েছে, অট্টালিকা তৈরি হয়েছে, আমাদের জীবন যাত্রার মান অনেক বদলে গেছে তারপরও আমরা নিরাপদ যে বাসভূমি তা দেখতে পাইনি। এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, ছোট ছোট শিশু বন্ধুরা আমরা কাজ করি ওই সময়টা ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা কাজ করি আমাদের শিশুদের জন্য যেনো একটি শান্তির পৃথিবী তৈরী করতে পারি, আমাদের পৃথিবী তৈরি করতে পারি হিংসা-বিদ্বেষ বাদ দিয়ে যেনো ভালোবাসার পৃথিবী তৈরি করতে পারি সে লক্ষে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শিশুরা পর্যন্ত ঘৃণা ও সন্ত্রাসের বাইরে থাকতে পারছে না। আমরা দেখছি যে আমাদের শিশুরা অহরহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, হত্যার শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, একটা ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশু তাকে কি করে নির্যাতন ও হত্যা করা যায়? এটা আমাদের বোধগম্য নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে তো জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অনেক বিকৃত খারাপ কথা আমাদের শুনতে হয় আসলে সেটা সঠিক নয়। সত্যিকারে জিয়া হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমরা কাউকে ছোট করতে চাই না। যারা মাথার উপরে আছেন আমরা তাদের সবাইকে মাথার উপরেই রাখতে চাই। কিন্তু যে মানুষটির অবদান আছে, যে মানুষটি তার জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, যুদ্ধ করেছন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তাকে ছোট করার অধিকার কারো নেই। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে আমরা অনেকেই তাকে ছোট করতে চাই। ছোট করা যায় না। যার যা অবদান জাতি তা সবসময় স্মরণ রাখে, তা স্বীকার করে এবং তার মূল্য তাকে দেয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা অনেকেই জানি না এই যে শিশু একাডেমী এটা তৈরী করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top