গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সেই সাথে তিনি দুর্নীতিতে জড়িতদের শাস্তিও দাবি করেছেন।
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার নিজের স্বার্থে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে দেন। বেগম খালেদা জিয়া আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। তিনি যা অতীতে বিভিন্ন সময়ে আপনাকে করেছেন। সুতরাং নিজের স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে তার মুক্তির ব্যবস্থা করুন।’
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে আলাল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ভাই এবং বোনেরা, আজকে আপনারা বাংলাদেশের পতাকার অবস্থাটা দেখেন, জাতীয় পতাকা দিয়ে আমাদের বোনদের অন্তর্বাস বানানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অ্যামাজন ২০১০ সাল থেকে এই বিজ্ঞাপনটি প্রচার করছে। অশ্লীল বিজ্ঞাপনটি দেখলে গা শিউরে ওঠে। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং আইসিটি মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, তারা উত্তর দিতে পারেন নাই। প্রত্যেকে বলেছেন, খতিয়ে দেখা হবে। আর কত খতিয়ে দেখবেন আপনারা?’
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘যার মুক্তির দাবিতে আজকের এই মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ, তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত পরিষ্কার, ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। দুদকের মামলা আদালতে প্রমাণিত হয়নি। ৪০৯ দণ্ডবিধিতে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, আপনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ক্ষমতা ব্যবহারে অবহেলা করেছেন। হাইকোর্ট সেই সাজা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক কোটি টাকা আদায় করার জন্য যে নোংরামি করলো, তারা বহিষ্কার কেন? তাদেরকে কি আমরা জেলখানায় দেখতে পাবো না? তাদেরকে যারা অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে নষ্ট করল এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আখতারুজ্জামান, তাকে কি ঘাড় ধরে বের করে দেয়া হবে না? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে ফুলের মালা নিয়ে মিছিল করে, তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে না?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেন, বালিশ-পর্দা এগুলো নাকি ছিঁচকে চুরি। ভালো কথা, এগুলো যদি ছিঁচকে হয়, আপনারা তো বড় গলায় বলেছেন, দেশ বানাবো সিঙ্গাপুর। দেশ বানাইতে চেয়েছেন সিঙ্গাপুর ভিসির কারণে হয়ে গেছে জামালপুর। আপনারা দেশ বানাতে চেয়েছেন সিঙ্গাপুর, আপনাদের লাখ লাখ টাকার পাথর কয়লা চুরির কারণে এটি হয়েছে দিনাজপুর। দেশ বানাতে চেয়েছেন সিঙ্গাপুর, পর্দা চুরির কারণে দেশ হয়ে গেছে ফরিদপুর।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম শেখ হাসিনা নাকি কঠোর হচ্ছেন। আরে ভাই, শেখ হাসিনা কঠোর ছিলেন নাই বা কবে। শেখ হাসিনার অবৈধ কঠোরতার কারণেই তো আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি। তার প্রতিহিংসার কারণেই আজকে তারেক রহমান দেশ ছাড়া।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।