ইতোমধ্যে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ দল। আফগান স্পিন ভীতিই হারিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। এছাড়াও ব্যাটসম্যানদের বিচক্ষণতার অভাব আর পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলেই চট্টগ্রাম টেস্টে হারের দ্বারপ্রান্তে টাইগাররা। চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
শুধু তাই নয় ব্যর্থতার পেছনের কারণ হিসেবে যোগ্যতা সম্পন্ন যথেষ্ট বোলারের অভাবও দেখছেন বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার।
‘আমরা এই টেস্ট ম্যাচ হারার খুব কাছাকাছি। একমাত্র বৃষ্টি আছে আর আল্লাহ যদি স্বয়ং আমাদের দুজনকে না দেখেন তাহলে হারার সম্ভাবনাটাই বেশি।’
হাসতে হাসতে কথাগুলো সাকিব বলছিলেন রসিকতার ছলে। কেননা এমন একটা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম টেস্ট, সেটা নিয়ে হয় রসিকতা চলে, নতুবা অতিমানবীয় কিছুর অপেক্ষা। সেটা করে দেয়ার সামর্থ্য আছে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারের! তবে উইকেটের তুলনায় টার্গেট যে এখনও পাহাড়সম!
প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে অল আউট হওয়া বাংলাদেশের সামনে যখন টার্গেট ৩৯৮, ম্যাচটা হয়ত সেখানেই হেরে গেছে টাইগাররা। সেটা মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে আফগানদের স্পিন জুজুর কাছে। ক্রিকেটারদের এই মনস্তাত্ত্বিক অসহায়ত্ব অকপটেই স্বীকার করেছেন টেস্ট ক্যাপ্টেন।
সাকিব আল হাসান বলেন, আমার কাছে মনে হয় আমরা অনেক ভয় নিয়ে খেলি, অনেক প্রেসার নিয়ে খেলি। দিনশেষে একটা ক্রিকেট ম্যাচ, অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কিন্তু, দুনিয়ার সবকিছুই এটা না। কিন্তু অনেক সময় আমরা এমনটা ভেবে অনেক প্রেসার নিয়ে ফেলি। এতে পারফর্ম করাটা আমাদের জন্যই কষ্টকর হয়। আর যখন পারফর্ম করতে পারিনা তখন প্রেসার আরো বেড়ে যায়।
ম্যাচ বাঁচাতে বিশদ পরিকল্পনা ছিলো বাংলাদেশের। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন সহ আরো কতো কি? কিন্তু কাজ হয়নি কিছুতেই। উইকেট নিয়ে প্রশ্ন ছিলো শুরু থেকেই। তবে সবচেয়ে বড় অভাবটা যে ব্যাটসম্যানদের বিচক্ষণতায়!
সাকিব বলেন, সমস্যা হলো, আমরা বড়ো ইনিংস খেলতে পারিনি। প্লানিংয়ে যে খুব বেশি সমস্যা সেটা বলবো না। একটা প্লেয়ারের যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে হতে পারে। উইকেট আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে পাইনি কিন্তু এমন না যে আমরা এভাবে ভেঙে পড়বো। এখানে আমাদের কোয়ালিটি দেখানোর ভালো জায়গা ছিলো, যেটা আমরা করতে পারিনি।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রায় দুই দশকে বাংলাদেশের খুঁটিটা এখনও নড়বড়ে। কিন্তু কেন? উত্তরটা বেশ সোজা সাপটা সাকিবের।
‘একটা টেস্ট ম্যাচ জিতে গেলে আপনার সব ধরণের অপশন থাকতে হবে। আপনার রিস্ট স্পিনার থাকতে হবে, অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মতো ১৪০/১৫০ গতিতে বল করার মতো থ্রেড বোলার থাকতে হবে। একটা বোলার থাকতে হবে যে, সারাদিন একটা জায়গায় বোলিং করতে পারে, রান দেয় না। তারপর আপনার একটা দুইটা এক্সফ্যাক্টর থাকতে পারে। এরকম যতদিন না হচ্ছে ততদিন আমাদের ওরকম কিছু বিশেষ প্লান করে আমাদের ম্যাচ জিততে হবে, যখন ওই স্পেসিফিক প্লানটা সব জায়গা থেকে ঠিকভাবে না আসবে তখন আর ম্যাচ জেতাটা সম্ভব হবে না।’