এটা অস্বাভাবিক সরকার : ড. খন্দকার মোশাররফ

বর্তমান সরকারকে অস্বাভাবিক সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এখন সব কিছু অস্বাভাবিক ভাবে চলছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ ক্রয় করা ও তুলতে কতো টাকা লাগে সেটা দেখলাম। এখন ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের পর্দা কেনার দুর্নীতি, এটাকেও হার মানিয়েছে। এক সেট পর্দা কিনতে নাকি ৩৭ লাখ টাকার উপরে লেগেছে। কেনো? কেনোনা, কারণ সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই।’

তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে লুট করছে। ব্যাংক লুট হচ্ছে কোনো বিচার নাই, রিজার্ভ লুট হচ্ছে কোনো বিচার নাই। খেলাপিদের আরো সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এখন যারা বালিশ আর পর্দা কেনার দায়িত্বে বেশি বড় কর্মকর্তারা, তারা মনে করছে গত ১০ বছরে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা সুইচ ব্যাংকে। তো আমরা কিছু করি না কেনো? তো তারা এই বালিশ আর পর্দা কেনার মাধ্যমে লুটপাট করছে। এটা জাতি ও দেশের জন্য অত্যন্ত অশনিসংকেত।’

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও শহীদ জিয়ার অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট নামের একটি সংগঠন।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আযাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঠেকেছে। এই সমাজে আজকে পচন লেগেছে। এই দুর্নীতি আমরা দেখছি দেশে গণতন্ত্র নেই বলে। যদি সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হতো তাহলে তাদের দায়বদ্ধতা থাকতো। যেহেতু এই দায়বদ্ধতা নাই, তাই যে যা ইচ্ছে তাই করছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বিএনপি নাকি ভোটের রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ রাতে আওয়ামী লীগ সারা জীবনের জন্য ভোটের রাজনীতি থেকে বিদায় হয়ে গেছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার আর মুখ নেই। তারা নিজেরা বিদায় হয়ে গেছেন। এটা ইতিহাসে সত্য, যা মোছা যাবে না।’

সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। দেশ স্বাধীনের সোয়া তিন বছরের মাথায় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। এর পর শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করতে চায় সেসব দলের নিবন্ধনের আহ্বান জানান তিনি। এরপর নতুন করে নিবন্ধন নিয়ে এই আওয়ামী লীগ রাজনীতি শুরু করে। এই ইতিহাস আওয়ামী লীগ মুছবে কিভাবে? কিভাবে তারা অস্বীকার করে?’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ বিএনপি সেখানে সফল। এজন্য তারা শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিতে চায়।

Share this post

scroll to top