২০৫ রানে অলআউট বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে ২০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। আফগান স্পিনার রশিদ খান নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। দ্বিতীয় দিনে অপরাজিত থাকা মোসাদ্দেক হোসেন (৪৪) আর তাইজুল ইসলাম (১৪) শুরু করেন তৃতীয় দিন। দিনের প্রথম ওভারেই তাইজুলকে আউট করেন মোহাম্মদ নবী। এরপর নাইম হাসানকে (৭) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। মোসাদ্দেক হোসেন ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তান ১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে।

আফগান অধিনায়ক রশিদের গুগলি একটুও পড়তে পারেননি শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া নাঈম। বল বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভেতরে ঢুকে লাগে প্যাডে। আম্পায়ার আউট দিতে সময় নেননি একেবারেই। নাঈম অবশ্য রিভিউ নিয়েও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেননি। নাঈম ফেরেন ৭ রানে আর বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ২০৫ রানে।

এর আগে ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যে তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই বাজে শট খেলতে গিয়ে বোল্ড আউট হয় তাইজুল ইসলাম। আগের দিন দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন তাইজুল। নতুন দিনের শুরুতেই হারিয়ে ফেললেন নিজেকে। রাউন্ড দা উইকেটে করা মোহাম্মদ নবীর স্ট্যাম্প সোজা বলে স্লগ করতে গেলেন। বল আসার আগেই চালিয়ে দেন ব্যাট। বল লাগে স্টাম্পে।

দ্বিতীয় দিন শেষে ফলোঅন এড়ালেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বাংলাদেশ। লোয়ার অর্ডারের কল্যাণে দিন শেষে ৬৭ ওভারে ৮ উইকেটে হারিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেছে সাকিব আল হাসানের দল। ৪৪ রান নিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও ১৪ রান নিয়ে তাইজুল ইসলাম রয়েছেন ক্রিজে। আফগানিস্তান থেকে এখনো পিছিয়ে ১৪৮ রান।

প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের করা ৩৪২ রানের জবাব দিতে নেমে পঞ্চাশের ঘরেই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শূন্য রানে প্রথম উইকেট হারানো স্বাগতিকরা তৃতীয় উইকেট হারায় দলীয় ৫৪ রানে।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই তামিম ইকবালের জায়গায় খেলতে নামা শাদমান ইসলামের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কোনো রান না করেই ফিরে যান সাদমান। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনে মুমিনুল হকের পরিবর্তে তিন নম্বরে ক্রিজে আসেন লিটন দাস। ১ উইকেটে ১ রান নিয়ে মধাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সেশনে লিটন দাস ও সৌম্য সরকার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও দলীয় ৩৮ রানে সৌম্য সরকারও ফিরে যান। ব্যক্তিগত ১৭ রানে মোহাম্মদ নবীর বলে এলবিডব্লিউ হন সৌম্য। কিছুক্ষণ পর রশিদে খানের বলে লিটন দাস(৩৩) বোল্ড হয়ে গেলে সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় রান তখন ৫৪।

এ অবস্থায় ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন ‍মুমিনুল হকের সাথে। দুজনে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা কররেও দলীয় ৮৮ রানের মাথায় সাকিব ১১ রান করেন আউট হলে দল আরো বিপাকে পড়ে।

সাকিবের পর ক্রিজে এসে দুই বল মোকাবেলায় শূন্য রানে আউট হলে অনেকটাই পলোআন শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ।

আগে ৫৪ রানে তিন উইকেট চলে যাওয়ায় মিডল অর্ডারের দায়িত্ব ছিল ইনিংস মেরামত করার, কিন্তু রশিদ খানের এক ওভারে দলের সেরা দুই তারকাকে হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় দল।

টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসান ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে মুমিনুল, মুশফিক ও সাকিবের দিকে তাকিয়ে ছিল সমর্থকরা। সাকিব-মুমিনুল জুটি সেই পথেই চলছিল; কিন্তু ৩৩তম ওভারে রশিদ খানের বলে সাকিব ব্যক্তিগত ১১ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হয়ে যান। নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম এসে দ্বিতীয় বলেই আউট! ব্যাটের কোনায় লেগে নাগের ডগায় দাড়ানো ফিল্ডারের হাতে যায়। যদিও আউটটি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তৃতীয় আম্পায়ারও অনেকভাবে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্তে এসেছেন।

এর ফলে বাংলাদেশর রান দাড়ায় ৫ উইকেটে ৮৮ রান। ১০৪ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭ রান করে ফেরেন মাহুমুদুল্লাহ রিয়াদ। দেখে শুনে খেলে মুমিনুল তুলে নেন ফিফটি। হাফ সেঞ্চুরি করে বেশিদূর যাওয়া হয়নি তারও। ৫২ রান করে মোহাম্মদ নবীর শিকার হন তিনি। মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান। ১৪৬ রানে ৮ উইকেট হারালে সেখান থেকে দলকে মোসাদ্দেক ও তাইজুল দলকে এগিয়ে নেয়ার কাজ করেন। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৫২ রান। তৃতীয় দিন দলকে কতটুকু ব্যাটসম্যানদের কাজ এগিয়ে নেন সেটাই দেখার বিষয়।

দিন শেষে আফগান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক রশিদ খান। ১৮ ওভার বল করে ৪৭ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ৪টি উইকেট। এছাড়াও মোহাম্মদ নবী ২, কায়েস আহমেদ ও ইয়ামিন আহমেদজাই একটি করে উইকেট শিকার করেন।

Share this post

scroll to top