মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ৪টি ইউনিয়নের হাজারো মানুষের যাতায়াতের ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো। পাকা সেতুর অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে হাজারো মানুষ। উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ধলেশ্বরী শাখা নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ এই বাঁশের সাঁকো।
জানা যায়, এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে এই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। উপজেলার রাজানগর, চিত্রকোট, শেখরনগর, কেয়াইনসহ ৪টি ইউনিয়নের হাজার মানুষ প্রতিদিন ঢাকা যাতায়াত করেন। এছাড়া হাটবাজার ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। এই ব্রিজটি হলে এই রোড দিয়ে ৩০ মিনিটে মোহাম্মদপুর, একঘণ্টায় এয়ারপোর্টে যাওয়া যাবে বলে জানান এলাকাবাসী।
বছরের পর বছর চরম ভোগান্তি সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুটি মসজিদ, একটি মাদরাসা ও এতিমখানা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে। একটি পাকা সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর বহুদিনের প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে।
গ্রামবাসীদের সাথে কথা হলে অনেকেই আক্ষেপের সুরে বলেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছে ভোট চাইতে আসে। অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেয় আমাদের যাতায়াতের পথে ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ার। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর গ্রামবাসীদের খোঁজ-খবর নেয় না। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
শিক্ষিকা শাকিলা আক্তার বলেন, কিছু দিন পরপর এই ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো থেকে নিচে পড়ে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হন। আমিও পানিতে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছি। আবার পানিতে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মহিলা ও পুরুষদের।
উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই ব্রিজটা নির্মাণের জন্য বহুদিনের দাবি ওই এলাকার মানুষের। বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হয়। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসীর জন্য কিভাবে এই ব্রিজ নির্মাণ করা যায় সে জন্য আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ আমরা চেষ্টা করছি। দ্রুত যেন ব্রিজটা নির্মাণ করা যায়। যাতে এলাকার মানুষগুলোর দুর্ভোগ কমাতে পারি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফিকুন নাহার বলেন,‘এই বিষয়টি আমি অবগত আছি। কিছুদিন আগে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাওয়ার সময় দেখেছি এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আগে কয়েকবার এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য কাগজপত্র পাঠানো হলেও ঢাকা থেকে সেটা অনুমোদিত হয়নি। তার কারণে আমরা চেষ্টা করছি সেখানে খুব শিগগিরই লোহার একটি ব্রিজ বানিয়ে দেয়ার।