নতুন করে পদ্মা নদীতে পানি ও স্রোত বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ ঘাটের মধ্যে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল গত তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে।ফলে দেশের দক্ষিনবঙ্গের সাথে উত্তরবঙ্গের সহজ পথে ও কম সময়ে যানবাহন ও জনসাধরনরে নদী পার হয়ে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরি বিভাগ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নৌপথে রাজবাড়ী ও পাবনার সহজ যোগাযোগ মাধ্যম জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুট। কিন্তু পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ৩ দিন ধরে এ রুটে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুট দিয়ে নদী পারাপার হওয়া যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে ফেরি পারাপার।এতে ইজারাদারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।একই সাথে জনগন ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদীর পার হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে দুটি ছোট ফেরি এবং ইজারাদারের মাধ্যমে দুটি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ২৮ আগস্ট বুধবার থেকে ফেরিগুলো স্রোতের বিপরীতে চলতে পারছে না। ফলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে যাত্রী পারাপারে স্রোতের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই চলছে লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। লঞ্চ ও ট্রলারে প্রতিদিন ৫টি করে মোট ১০ট্রিপ মারা হয়।
রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া-নাজির গঞ্জ ফেরি ঘাটের ইজারাদারের ম্যানেজার আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ নুরুল ইসলাম ও লঞ্চ ঘাট ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে কয়েকদিন ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে যাত্রী পারাপারে তাদের লঞ্চ চলাচল করেছে। এরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো পুরাতন হলেও মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। এ রুট দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে যে দুটি ফেরি চলাচল করে তা অনেক পুরাতন এবং ছোট। নদীর স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা ওই ফেরির পক্ষে সম্ভব না।
দুটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটে নতুন এবং বড় ফেরি প্রয়োজন। শুধু ফেরির এ করুন অবস্থা জেনে যানবাহন কম আসে এ ঘাটে। এছাড়া এরুটে চলাচলকারী দুটি লঞ্চ রয়েছে। যা অত্যন্ত ছোট এবং লক্কড় ঝক্কড়। লঞ্চে উঠলে নৌকার মতো দোলে। পাশাপাশি নৌকায়ও যাত্রী পারাপার করা হয়। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই এ নিয়ে। এছাড়া ফেরি ঘাটের পল্টুনের অবস্থাও ভালো না। ফেরি, লঞ্চ ও নৌকা একই পল্টুনে ভেড়ে। যাত্রীদের বাথরুম, দাঁড়ানো বা বসারও কোনো ব্যবস্থা নেই।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আশিকুর রহমান জানান,জৌকুড়া ও নাজিরগঞ্জ নৌরুটে বিগত ১৫বছর ধরে দুটি ইউটিলিটি ফেরি দিয়ে তারা ইজারার মাধ্যমে যানবাহন পারাপার করে আসছে। তবে ফেরি দুটি অনেক পুরাতন। ফলে চলতি বছর পদ্মায় দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাকি পানি বৃদ্ধির ফলে ওই ফেরি ২টি যানবাহন লোড করে কিছুতেই ঘাটে যেতে পারছে না। গত ২৮আগষ্ট জৌকুড়া থেকে ৩টি গাড়ি নিয়ে একটি ফেরি নাজির গঞ্জ যাবার সময় স্রোতের টানে ৪/৫কিলেমিটার ভাটিতে রাজাড়ীর গোদার বাজার এলাকায় চলে যায়।
পরে ওই ফেরিটি নদীর কুল দিয়ে অতিকষ্টে অন্য একটি নৌযানের সাহায্যে ঘাটে ফিলে যায়।এরপর থেকে গত তিনদিন ধরে আর কোন ফেরি পারাপার হচ্ছে না। স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে না পারায় দুর্ঘটনা এড়াতে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। স্রোত কিছুটা কমলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু করা হবে। এছাড়া এ রুটে পারাপার হওয়া যানাবহনগুলো এখন লালন শাহ সেতু ব্যবহার করছে। আশা করা যায় আগামী রোববার নাগাদ ফেরি চলাচল শুরু করা যাবে।