স্বামী-সন্তান ছেড়ে পরকীয়ায় আসক্ত স্ত্রীর পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

রংপুর মহানগরীর হাজিরহাট থানার মনোহর এলাকায় পরকীয়ার আসক্তিতে লায়লা আক্তার নামে এক গৃহবধুর বিরুদ্ধে স্বামী-সন্তানদের ছেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনায় মায়ের মমতা বঞ্চিত অসহায় দুটি সন্তান এখন তাদের দাদির কাছে জীবনযাপন করছে। এদিকে স্ত্রী লায়লাকে তালাক দেয়ার পর উল্টো স্বামী রানার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর হাজিরহাট থানার মনোহর অভিরাম গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের পুত্র রেজাউল হক রানার সাথে কোতয়ালী থানার কেল্লাবন্দ গ্রামের আমিনুরের কন্যা লায়লা আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তাদের ঘরে লিয়ন ও লিমন নামের ২ পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। এরইমধ্যে লায়লা আক্তার পরকীয়ায় আসক্ত হয়। একপর্যায়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পিতার বাড়িতে চলে যায় লায়লা। পরে স্ত্রী লায়লা বেগমকে আনতে গেলে স্বামী রানাকে মারপিট করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার হুমকি দেয় লায়লা ও তার পরিবার। বিষয়টি জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন রানা।

এদিকে লায়লা আক্তার স্বামীর ঘরে না আসায় স্বামী রানা তার স্ত্রীকে ১০১৮ সালের ৬ অক্টোবর রংপুর মহানগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের মুসলিম ম্যারেজ রেজিষ্টার সৈয়দ বাতেন রোম্মানের মাধ্যমে তালাক দেন। লায়লা আক্তার তালাকের নোটিশ প্রাপ্তের ৬ দিন পর ১২/১১/২০১৮ ইং তারিখে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল ১-এ যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে রানা ও শাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে আসামী করে পিটিশন মামলা করে (যার নং ২৮৩/১৮)। আদালত মামলার তদন্তভার সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে দিলে তিনি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

রানা-লায়লা দম্পতির ১১ বছরের শিশু সন্তান মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র লিয়ন জানায়, আমার মা আমাদের সাথে থাকতে চান না। কোন কিছু হতে না হতেই তিনি নানার বাড়ি চলে যান। আমাদের কোনো কথা তিনি শোনেনও না। বাবা যেহেতু মাকে ছেড়ে দিয়েছেন, সে কারণে আমরা দুই ভাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাবার কাছেই থাকবো।

অপর পুত্র স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র লিমন জানায়, মা যেহেতু বারবার আমাদের ছেড়ে চলে যায়। তাই আর মায়ের কাছে যেতে চাই না। দাদি এবং বাবার কাছেই থাকতে চাই।

রানার মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি ছেলের বউকে শোধরানোর জন্য। কিন্তু সে শোধরালো না। মোবাইলে কোন ছেলের সাথে সারা রাতদিন কথা বলে। সেটা বললেই সে বিভিন্ন ধরনের কাণ্ড কীর্তি করে। বারবার আমাদের বাড়ি থেকে চলে যায়। এবার গিয়ে জানিয়ে দিলো যে- আমার ছেলের সংসার করবে না। এমন সময় আমার স্বামী মরে যাওয়ার ৩ দিন পরে সে আমার এবং আমার ছেলের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা দিলো। এখন দুটি শিশু সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্ট করে আছি। বাচ্চা দুটিও কষ্টের মধ্যে পড়ে গেছে।

ভূক্তভোগী রেজাউল হক রানা জানান, কোনো এক ছেলের সাথে ঘণ্টার ঘণ্টার পর সে (লায়লা) মোবাইলে কথা বলে। হাসি তামাশা এবং বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক আলোচনা করে। বিষয়টি থেকে আমি তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনভাবেই তা শোনে না। কিছু বললেই লায়লা বাপের বাড়িতে চলে যায়। সর্বশেষ বাপের বাড়িতে গিয়ে আমাকে জানিয়ে দেয়- সে আমার সংসার করবে না। এরপর আমি নিয়ম মেনে তালাক দিলাম। কিন্তু তালাক দেয়ার পর সে আমার ও আমার বৃদ্ধা মায়ের নামে নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দিলো। আমি ন্যায়বিচার চাই।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত লায়লা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক থাকায় সে আমাকে সব সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। আমি আদালতে মামলা দিয়েছি। মামলার ফলাফল যা হবে তাই আমি মেনে নেব।

Share this post

scroll to top