দেশে বিচার বলতে কোনো কিছু নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তার জামিন হচ্ছে না। কারণ বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে বন্দি। তাদের রায় দেয়ার বা জামিন দেয়ার কোন স্বাধীনতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। তিনি আরো বলেন, বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আদালতের দরজায় দৌড়াচ্ছে, অথচ তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে আজকে আমাদেরকে কি করতে হবে? আমাদের একটি কথাই মনে রাখতে হবে বেগম খালেদা জিয়া বলে গিয়েছিলেন তোমরা ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করো। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ জাগরিত হয়।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন বেগম সেলিমা রহমান। মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন- মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী নূরে আরা সাফা, মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আজকে আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই- চামড়ার দামে ধস নেমেছে, রড দিয়ে হামলা চলছে, খুন-গুম-হত্যা চলছে, শিশু-নারী হত্যা চলছে। আজকে মানুষ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা জানে আজকে যদি তারা কথা বলে তবে তাদের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়বে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। কারণ বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার মধ্যরাতের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তারা গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে কারাগারে আটক করে রেখেছে। শুধু তাই নয় তারা জনগণের উপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জনগণকে কথা বলতে দিচ্ছে না বিশেষ করে নারী ও শিশুর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। জাতীয়ভাবে আমাদের শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন দিবস পালন করলে চলবে না। আমাদের সকল নারী সমাজকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।
বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অপেক্ষা করছে কখন রাজপথে নামবে কখন এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে? তারা সাহস পাচ্ছেন না, কারণ তাদের সন্তানকে, তাদের কন্যা সন্তানকে, তাদের কিশোরী সন্তানকে, তাদের শিশু সন্তানকে রাজপথে নামলেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী কিংবা প্রশাসনের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষণ করবে না হয় হত্যা করবে। তিনি বলেন, আজকে একের পর এক ধর্ষণ চলছে। এই তো দুদিন আগে আমরা দেখলাম ট্রেনের বগির মধ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। মাদারীপুরে আমরা দেখেছি নৌকা থেকে নামিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে।
বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন যে মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছিলো, সেই মিন্নিকে অন্যায়ভাবে আটক করে তার ওপর পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে তাকে দিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। ক্ষমতায় থেকে যারা এই সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে তাদেরকে যাতে কোনো দোষ দিতে না হয় সেজন্য তারা নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আজকে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের এক এমপি নিজেই বলেছেন, ডেঙ্গু আমাদের উপর গজব হিসেবে নেমেছে, নমরুদের গজব। তাদের যে পাপ, তাদের যে অত্যাচার তারা তা উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে নাই। তারা উন্নয়নের বুলি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে খুশি রাখার চেষ্টা করছে। তারা শুধু উন্নয়নের বুলি উড়িয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে।
বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আমাদের একটিই লক্ষ্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। কারণ খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই স্বাধীনতার মুক্তি। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবো ইনশাআল্লাহ।