একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে দুই হাজারের কোঠায়। জুনের ৩০ দিনেও দুই হাজার ছাড়ায়নি। গত ২৭ জুলাইয়ের পর থেকে দৈনিক হাজারের ঘরে পৌঁছাচ্ছে। তবে গতকাল দুই হাজার ৬৫ জন আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিকিৎসার জন্য। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি আগস্টের পুরো সময়টাতেই ডেঙ্গুর আক্রমণ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। ডেঙ্গু মশা বেড়ে ওঠার মতো উপযুক্ত পরিবেশ ইঙ্গিত করছে এখনকার বৃষ্টির ধরন, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা। ফলে আগস্টের এই ক’দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়ার আশঙ্কাই রয়েছে। তারা বলছেন, ডেঙ্গুর প্রজননস্থল ধ্বংস করে দিতে পারলে অবস্থার সামান্য উন্নতি হতে পারে। এ দিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এতে উৎকণ্ঠা বাড়ছে অভিভাবকদের। প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে শিশুরা। আতঙ্ক জেঁকে বসেছে জনমনে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার পরও বাগে আনা যাচ্ছে না ডেঙ্গুর বিস্তার। সারা দেশেই এখন ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার আতঙ্ক। এতে আক্রান্ত হয়ে গতকাল প্রাণ হারিয়েছেন আরো চারজন। এর মধ্যে দুইজন স্কুলশিক্ষার্থী।
গতকাল সোমবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে ডেঙ্গুবিষয়ক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিদ ডা: ভুপেন্দর নাগপাল ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তথ্যভিত্তিক কারিগরি বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা: এম আকতারুজ্জামান।
মহাপরিচালক ডেঙ্গুর প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সাধারণ মানুষকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান। ভুপেন্দর নাগপাল জানান, ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অবশ্য করণীয় হলো এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ও প্রজননস্থল ধ্বংস করার জন্য জনসাধারণের অংশগ্রহণ। এডিস মশা ঘরের কোনায়, অন্ধকার আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গায় যেমন পর্দার পেছনে, খাট ও টেবিল-চেয়ারের নিচে থাকতে পছন্দ করে। এ মশা খুব স্বল্প পানিতে ৫ মিলি অথবা এক চা চামচ পরিমাণ পানির মধ্যে ডিম ছেড়ে দিতে পারে এবং প্রতিকূল পরিবেশে টিকেও থাকতে পারে। ডা: নাগপাল জানান, মশার লার্ভা ধ্বংসে ১০ লিটার পানিতে এক গ্রাম টেমিফস মিশিয়ে ছিটানো যেতে পারে। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। প্রজননস্থল ধ্বংসের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাকাতে অনেক নির্মাণকাজ হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থল ধ্বংস করে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যায়।
অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ইতোমধ্যে ১০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে ডেঙ্গু কিট ও ওষুধ কেনার জন্য। উপজেলা হাসপাতালে দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত দুই লাখ টাকা। ফলে জেলা ও উপজেলায় ডেঙ্গু চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হবে না।
সারা দেশে গত ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ২৭ হাজার ৪৩৭ জন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে সাত হাজার ৬৫৮ জন। ঢাকার ৩৮ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে চার হাজার ৯৬২ জন। সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ জন।
রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আক্রান্তের পার্থক্য ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। গতকাল রাজধানীতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ১৫৯ জন এবং রাজধানীর বাইরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯০৬ জন। শুধু আগস্ট মাসেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৬ জন।
খুলনায় আরেক নারীর মৃত্যু
খুলনা ব্যুরো জানায়, ডেঙ্গু জ্বরে খাদিজা বেগম (৪০) নামে এক মহিলা খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে খুলনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনে। এর আগে রোববার এক স্কুলছাত্র এবং এক বৃদ্ধা মারা যান। গতকাল সোমবার সকাল ৭টার দিকে খাদিজা মারা যান। তিনি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামের দুলু মোল্লার স্ত্রী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খাদিজা বেগম গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় জ্বর নিয়ে খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। তার রক্তে প্লাটিলেট কাউন্ট খুবই কম ছিল। খুলনার সিভিল সার্জন ডা: এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
বোয়ালমারীর স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, বোয়ালমারী উপজেলার কামারগ্রামের স্কুলছাত্রী অথৈ সাহা (১১) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। অথৈ বোয়ালমারী পৌর সদরের কামারগ্রামের কানাই সাহার মেয়ে এবং নিউ অলব্রাইট প্রিক্যাডেট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। সে গত ৬-৭ দিন জ্বরে ভুগছিল। প্রথমে তাকে স্থানীয় ডাক্তার দেখানোর পর রোববার ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কানাই সাহার তিন মেয়ের মধ্যে অথৈ দ্বিতীয়। এদিকে, ফরিদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২৪জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হলেন। এর মধ্যে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ১৯ জন। সিভিল সার্জন এনামুল হক জানান, গত দুই সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫৯ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১৭৬ জন। এদিকে, ডেঙ্গু আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও ফরিদপুরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা জানান, তাদের বাইরে থেকে স্যালাইন ও ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে। সদর উপজেলার শিবরামপুর থেকে জ্বরে আক্রান্ত শিশুকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা ইমরান নামে এক অভিভাবক জানান, রোববার সকালে তিনি তার শিশুকে নিয়ে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আনেন। ডাক্তার ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে বলার পর সারাদিন বসে থেকেও তিনি পরীক্ষা করাতে না পেরে বাড়ি ফিরে যান।
বগুড়ায় আরো ৩৪ রোগী
বগুড়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ার সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে আরো ৩৪ জন ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০২ জন। বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ৭৯ জন, সরকারি মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ১০ জন, বেসরকারি ইন্ডিপেনডেন্ট জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন, টিএমএসএস হাসপাতালে ৫ জন, শামছুন্নাহার ক্লিনিকে ২ জন, আদমদীঘি উপজেলা হাসপাতালে ১ জন ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ১ জন। এসব হাসপাতালে কীট সঙ্কট ও চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। এদিকে এ পর্যন্ত বগুড়ায় অবস্থান করা ১০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬ জনই শিশু। এদের কেউই বিগত কয়েক মাসের মধ্যে ঢাকা যাতায়াত করেনি।
সিরাজগঞ্জে আক্রান্ত ১৪৩
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জেলায় নতুন করে আরো ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে গতকাল সকাল পর্যন্ত ৬৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ৪৪ জন, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন, সিরাজগঞ্জ শহরের নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন, আভিসিনা ও মেডিনোভা হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এই রোগ শনাক্তের কীট না থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি স্বীকার করে সিভিল সার্জন ডা: জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই কীটগুলো সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়।
কুড়িগ্রামে চিকিৎসক সঙ্কট
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, গত দুই দিনে জেলার হাসপাতালে ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে রোববার ৭ এবং গতকাল ১০ জনকে ভর্তি করা হয়। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ৪৩ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে দুই শিশুসহ ২৩ জন। হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এরা সবাই ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে আবার পরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ায় ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে বেড সঙ্কুলানের কারণে হিমসিম অবস্থা চিকিৎসকদের। চিকিৎসক সঙ্কটে আসন্ন ঈদে সম্ভাব্য চাপ কিভাবে সামলাবেন তা নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: শাহীনুর রহমান সরদার জানান, আড়াই শ’ শয্যার হাসপাতালে ৪২টি পদের বিপরীতে বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন ১৩ জন। এ ছাড়া গোটা হাসপাতালে ২৬৬ পদের বিপরীতে জনবল মাত্র ১২৩ জন। ফলে বাড়তি চাপ নিয়ে কাজ করছে সবাই। সিভিল সার্জন ডা: এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের সব চিকিৎসককে একজন বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষককে দিয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
নড়াইলের হাসপাতালে আরো ৯
নড়াইল সংবাদদাতা জানান, নড়াইলে নতুন করে ৯ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে ৬ ও লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন আসাদ-উজ-জামান মুন্সী। মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন ১৭ জন। গতকাল পর্যন্ত ৩৭ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতজনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আতঙ্কে হাওরবাসী
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জ শহরসহ ১১ উপজেলার হাওরবাসী ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাদের সন্তানদের নিয়ে। গত ২৪ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ রোগী শনাক্ত করেছেন জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস জানান, ওই ১৩ জন রোগী ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে এসেছেন। বর্তমানে সদর হাসপাতালে একজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অন্যদের সিলেটে পাঠানো হয়েছে।
কলেজছাত্রীর মৃত্যু
মনোহরদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা জানান, দিপালী আক্তার (২৩) নামে এক কলেজছাত্রী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। দিপালী উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের পাইকান গ্রামের মো: রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে এবং ঢাকার মালিবাগ আবুজর গিফারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। গত রোববার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে দিপালীর বিয়ে হলে সে তার স্বামী কামালের সাথে ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করত। জ্বরে আক্রান্ত হলে দিপালীকে বনশ্রীর আল-রাজী ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিন দিন চিকিৎসার পর তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। গত বুধবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পরিবারের লোকজন তাকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এক দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পর গত রোববার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
নওগাঁয় ভর্তি ১৬ জন
নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, গতকাল জেলায় আরো আটজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ১০ দিনে জেলায় ৫০ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল শনাক্তকৃত ৮ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে তিনজন নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে নওগাঁর সদর হাসপাতালে ১৬ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন নওগাঁতেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান নওগাঁ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা: রওশন আরা খানম।
নীলফামারীতে ৩৪ জন শনাক্ত
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে আরো তিন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে ১২ দিনে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ জনের মধ্যে দুইজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। অন্য ২৫ জনকে ডোমার, সৈয়দপুর, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আগৈলঝাড়ায় আরো ২ জন শনাক্ত
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা জানান, আগৈলঝাড়ায় নতুন করে আরো দুইজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছেন চিকিৎসকেরা। উপজেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: মামুন মোল্লা জানান, গত শনিবার বিকেলে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন ঘোড়ারপাড় কাঠিরা গ্রামের সারোয়ার খানের ছেলে সজীব খান (২১) ও বাগধা গ্রামের এমদাদুল হক খানের স্ত্রী কল্পনা বেগম (৪৫)। তাদের ডেঙ্গু পরীক্ষায় পজেটিভ রিপোর্ট ধরা পরলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের গত রোববার সকালে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।