কাশ্মির এখন আর রাজ্য নয়

বদলে গেল ৬৯ বছরের ইতিহাস। জম্মু কাশ্মির নিয়ে বিতর্কীত সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিল মোদি সরকার। তুলে দেওয়া হল ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা। যার ফলে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা হারাল জম্মু-কাশ্মির। ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত এই উপত্যকায় থাকবে না আর আলাদা সংবিধান, আলাদা পতাকা।

একই দিন বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পাশাপাশি পাশাপশি জম্মু-কাশ্মিরকে ভেঙে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখ— এই দু’টি আলাদা রাজ্যের প্রস্তাব পার্লামেন্টে পেশ করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফলে জম্মু-কাশ্মির যে শুধু বিশেষ মর্যাদা হারিয়েছে তাই নয়, রাজ্যের স্বীকৃতিও হারনোর পথে। এই প্রস্তাবটি কার্যকর হলেই আর ‘রাজ্য’ থাকবে না জম্মু-কাশ্মির। হয়ে যাবে কেন্দ্র শাসিত বিশেষ অঞ্চল।

গতকাল পর্যন্ত যে জম্মু-কাশ্মির ছিল ‘বিশেষ মর্যাদা’ প্রাপ্ত রাজ্য, সোমবার থেকে সেটাই হয়ে গেল সাধারণ। পটভূমিটা অবশ্য তৈরি হচ্ছিল গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে। অমরনাথ যাত্রী এবং পর্যটকদের কাশ্মির ছাড়ার নির্দেশ, দফায় দফায় প্রচুর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের জেরে নানা জল্পনা ভাসছিল উপত্যকায়। কাশ্মিরীরা আশঙ্কা করছিল এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। যদিও কাশ্মিরের গভর্নর বলেছে হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

 

আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই শনিবার রাতে মেহবুবা মুফতির বাড়িতে সর্বদলী বৈঠকর করেন কাশ্মিরের বিভিন্ন দলের নেতারা। ওই বৈঠকের পরই কাশ্মিরের কয়েক জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। গৃহবন্দী করা হয় রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি-সহ অনেক নেতাকেই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল ১৪৪ ধারা জারি এবং ইন্টারনেট বন্ধের ঘোষণা।

সেই উত্তেজনা চরমে উঠতে শুরু করে সোমবার সকাল থেকে। নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকের পর ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর করা নির্দেশনামা পড়ে শোনান তিনি। ফলে কাশ্মিরের স্থায়ী বাসিন্দারা যে সব বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন, এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সে সব বাতিল হয়ে গেল। সূত্র : আনন্দবাজার

Share this post

scroll to top