দুর্নীতি করতেই নিষিদ্ধ মশার ওষুধ আমদানির পাঁয়তারা : মির্জা ফখরুল

আবারো দুর্নীতি করতে সরকার মশার নিষিদ্ধ ওষুধ আমদানির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, মশার ওষুধ নেই, কার্যকর হচ্ছে না। হবে কোত্থেকে? যে দুর্নীতি তারা করে তাতে তো মশার ওষুধ কার্যকর হওয়ার কথা না। এখন নতুন ওষুধ আনবে, সেখানে আরো দুর্নীতি হবে। কোন ওষুধটি আনা হচ্ছে? যেই দুইটা ওষুধ একেবারেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে থাইল্যান্ডে। সেই দুইটা ওষুধ নাকি আনা হচ্ছে। আর যে দুইটা ওষুধ আনা হবে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে আর কিছু জানে না।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্ত হোক গণতন্ত্র, নিশ্চিত হোক সুস্বাস্থ্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশীদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব ডা: মেহেদী হাসানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অ্যাগ্রিরকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সেলিম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা: রফিকুল ইসলাম, ডা: কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলন, ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা: ওবায়দুল কবির খান, ডা: এ কে এম ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই যে একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাহেব। উনি বলেছেন যে, কতজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তিনি বলতে পারবেন না, এটা তার জানা নেই। যখন ডেঙ্গু চরম আকার ধারণ করেছে তার আগে উনি (স্বাস্থ্য মন্ত্রী) বললেন, এসিড মশা নাকি রোহিঙ্গাদের মতো। তিনি বলেন, কত বড় অমানবিক হলে এই ধরনের কথা একজন মন্ত্রীর মুখ দিয়ে আমাদের শুনতে হয়। পরবর্তীকালে উনি যখন মালয়েশিয়ায় গেলেন, কেনো গেলেন জানিনা, পত্র-পত্রিকায় বেরিয়েছে- ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছেন। ফিরে আসার পরে তিনি বলছেন, তিনি জানেন না কতজন মারা গেছেন। বলছেন, ১৬ শ’ থেকে ১৭ শ’ আক্রান্ত হয়েছে।

বর্তমান অবস্থাকে হীরক রাজার দেশের সাথে তুলনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা আমদানি করছেন কলকাতার ডেপুটি মেয়রকে তাদের কনসালটেন্সির জন্য। এখন এই যে অবস্থা, এই সরকার, এই মন্ত্রী। হীরক রাজার দেশের চেয়েও এটা অধম হয়ে গেছে। হবু চন্দ্র রাজার গবু চন্দ্র মন্ত্রী। এই অবস্থার মধ্যে আছি আমরা দেশে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অবস্থা থেকে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছি। তারাই একমাত্র এই অবস্থা থেকে দেশ ও রাষ্ট্রকে মুক্তি দিতে। আমি যদি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, জনগণের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করতে পারি, আমরা যদি একটা ওয়েব সৃষ্টি করতে পারি তাহলে নিঃসন্দেহে তারা (সরকার) পরাজিত হবে। আমি বলব, কেউ হতাশ হবেন না, আপনাদের হতাশা পেরিয়ে আশার আলো নিয়েই সামনের দিকে এগোতে হবে। বার বার এই দুর্যোগ এসেছে, বার বার বিএনপিকে, বিএনপির দর্শনকে ধবংস করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু পারে নাই। প্রত্যেকবারই দেখবেন, ফিনিক্স পাখির মতোই বিএনপি জেগে উঠেছে। আবার মানুষকে সাথে নিয়ে এগিয়ে গেছে এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমাদেরকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, ড্যাব এখানে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এই যে মানুষের সঙ্গে আপনারা মিশে গেছেন, এখন যাচ্ছেন, মানুষের কাছে যান। মানুষের কাছেই সকলকে যেতে হবে, মানুষকে নিয়ে ফিরে আসতে হবে। এটা বড় বড় মনীষীদের কথা। আপনারা হচ্ছেন অগ্রণী শ্রেণী, অত্যন্ত উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী মানুষ। আপনারা পারবেন এই সমস্যা সমাধান করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে।

ফখরুল বলেন, এই অনির্বাচিত সরকার যারা ভোটে নির্বাচিত হয়নি, বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে তাদের কাছে একটা পরিষ্কার কথা আমরা বলতে চাই, সময় শেষ হওয়ার আগেই এই সংসদ বাতিল করুন, এই নির্বাচন বাতিল করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এদেশের জনগণ জানে কিভাবে এ ধরনের সরকারকে পরাজিত করতে হয়।

Share this post

scroll to top