নগ্নছবি দেখিয়ে স্কুলের ২ সহকারী শিক্ষিকাকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুলেরই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিচার চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে রোববার (৪ আগষ্ট) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী দুই সহকারী শিক্ষিকা শ্যামলী বালা ও শাহানা খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের সরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এদিকে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের সরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায় একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামলী বালা ও শাহানা খাতুনকে মোবাইলে নগ্নছবি দেখিয়ে ও বিভিন্ন ভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে শ্লীলতাহানি করে আসছিল। বিষয়টি স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানিয়েও কোনো সমাধান না পেয়ে রোববার জেলা প্রশাসকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা।
ভূক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা শ্যামলী বালা বলেন, চাকরি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি স্বাক্ষরসহ স্কুলের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গেলে তিনি কথার মাঝে আমাকে কু-প্রস্তাব দেন। বিষয়টি স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক শাজাহান আলী ও জহুরুল ইসলামকে জানালে তারা স্কুলের সভাপতিকে জানান। পরে প্রধান শিক্ষক সভাপতির নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা আর কখনও হবে না।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু তারপরও প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র সংশোধন না হয়ে আবারও গত ৪ জুলাই বিদ্যালয়েরই আরেকজন সহকারী শিক্ষিকা শাহানা খাতুনকে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে নিজ মোবাইলটি শিক্ষিকার হাতে দিয়ে জাতীয় সংগীত বের করতে বলেন। শাহানা খাতুন মোবাইল হাতে নিয়ে অশ্লীল ভিডিও দেখে মোবাইল ফেলে দিয়ে অফিস কক্ষ থেকে দ্রুত বের হয়ে বিষয়টি অন্যান্য শিক্ষকদের জানান।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের দেয়া কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও বিদ্যালয় সভাপতিকে জানানোর কারণে বিদ্যালয়ে চাকরি করতে দেবে না বলেও ওই প্রধান শিক্ষক হুমককি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের মোবাইল ফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা না বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুজ্জামান বলেন, কুপ্রস্তাবের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষিকা অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।