দীর্ঘ এক যুগ অর্থ্যাৎ ১২ বছরেরও বেশী সময় ধরে পল্লী বিদ্যুতের একটি খুটি রাস্তার মাঝখানে ‘সগৌরবে’ দাঁড়িয়ে আছে। দৃশ্যটি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী বোধামাঝিরঘোনা গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তার। এতে স্থানীয়দের চলাচলের দুর্ভোগ হলেও খুটিটি সরানোর কোন উদ্যোগ নেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খুটিটি সরানোর জন্য এলাকার লোকজন মিলে পল্লী বিদ্যুতের কর্তব্যরত অফিসারদের টাকা দিলেও কাজ হয়নি। আজ-কাল করতে করতে রাস্তার মাঝখান থেকে বিদ্যুতের খুটি আর সরাননি তারা।
উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী বোধামাঝিরঘোনা গ্রামের ভূক্তভোগী বাসিন্দা মোঃ রাসেল জানান, দীর্ঘ একযুগেরও বেশী সময় ধরে পল্লী বিদ্যুতের খুটিটি রাস্তার মাঝখানে পড়ে থাকলেও এটি কোনসময় সরানোর উদ্যোগ নেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। পল্লী বিদ্যুতের অফিসাররা এলেই আমরা তাদেরকে বিদ্যুতের খুটিটি সরানোর অনুরোধ করি। প্রত্যেকবারই তারা আমাদের আশ্বাস দেয় কিন্তু কোনবারই খুটিটি সরানোর ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় কৃষক আবদুস সালাম, কপিল, সামাদসহ আরো অনেকে জানান, খুটিটি সরানোর জন্য এলাকার লোকজন মিলে পল্লী বিদ্যুতের দাবিকৃত টাকাও অফিসারদের হাতে দিয়েছি। তারপরও খুটিটি সরাচ্ছে না তারা। এতে করে এ রাস্তা দিয়ে কোন গাড়ী চলাচল করতে পারছে না। সরকার রাস্তাটি নতুনভাবে করে দিয়েছে কিন্তু রাস্তার মাঝখানে পল্লী বিদ্যুতের খুটির কারণে সড়কটি দিয়ে কোন গাড়ী চলাচল করতে পারছে না।
ওই সড়কের পাশে অবস্থিত আখতারুজ্জামান চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজীব, ফাহিম, করিমসহ অনেক শিক্ষার্থী জানান, তাদের সুবিধার্থে গাড়ী চলাচলের জন্য সরকার এ রাস্তাটি পাকা করে দিলেও রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুটি থাকার কারণে রাস্তা দিয়ে কোন গাড়ী চলতে পারে না। তাই আমাদেরকে অনেকদূর থেকে হেঁটে এ স্কুলে আসতে হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, সড়কটি পাকাকরণের সময় খুটিটি সরানোর জন্য ঠিকাদারকেও অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম এলজিইডিতে পল্লী বিদ্যুতের খুটি সরানোর কোন বাজেট নেই উল্লেখ করে রাস্তার মাঝখানে অবস্থিত খুটিটি সরানোর অনুরোধ জানিয়ে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার বরাবরে একটি চিঠিও লিখেন। এরপরও কোন কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু ছৈয়দ টুকু বলেন,‘রাস্তাটি বুধামাঝির ঘোনা এলাকার চলাচলের একমাত্র রাস্তা। অনেক আগেই রাস্তার মাঝখান থেকে খুটিটি সরানোর বিষয়ে আমরা পল্লী বিদ্যুতকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কেন সরাচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জিহাদী জানান,‘রাস্তাটি নির্মাণের সময় স্থানীয় সরকার বিভাগকে অনুরোধ করেছিলাম উন্নয়ন বাজেট থেকে খুটিটি সরানোর ব্যবস্থা নিতে; কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের খুটি এলজিইডি সরাতে গেলে আইনী জঠিলতা তৈরী হবে বিধায় তারা তা না করে খুটিটি সরানোর জন্য পল্লী বিদ্যুতকে অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি দেন। বিষয়টি এখনো এ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ আছে। খুটিটি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ইনচার্জ পূর্ণেন্দু মজুমদার জানান, তিনি পেকুয়ার ইনচার্জ হিসেবে গত ২০ জুলাই যোগদান করেছেন। বিষয়টি তার জানা নেই। তবে রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুটি থেকে থাকলে তা অবশ্যই সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মোছাদ্দেকুর রহমান বলেন, বন্যা পরবর্তী বিদ্যুতের লাইন সংস্কারের বিভিন্ন কাজের চাপের কারণে পেকুয়ায় রাস্তার উপর থেকে খুটিটি সরানো সম্ভব হয়নি। তবে তা সরানোর জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন হয়ে আছে। ঈদের পরে অবশ্যই খুটিটি সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।