ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভার দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র চালের কার্ড বিতরণকালে হুড়োহুড়িতে আহত হয়ে হাফিজ উদ্দিন (৬২) নামে একজন মারা গেছেন। সে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আমুয়াকান্দা এলাকার বাসিন্দা। শনিবার দুপুরে ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে দশজন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং দু’জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে জায়নামুল জানায়, শুক্রবার ফুলপুর পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ভিজিএফের কার্ড বিতরণ করা হবে বলে মাইকিং করা হয়। শনিবার দুপুরে কার্ড নিতে বাবাকে নিয়ে ফুলপুর ডিগ্রি কলেজে আসেন। কার্ড বিতরণের সময় উপস্থিত শতশত মানুষের কার্ডের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এসময় পেছন থেকে মানুষের হুড়োহুড়ি শুরু হলে পুলিশ পাল্টা ঠেলা দিয়ে মানুষের ভিড় সামলানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে আমার বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ধাক্কাধাক্কিতে বুকে চাপ লেগে ব্যথা পান এবং দুরে সরে যান। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, পৌর এলাকার ভিজিএফ চালের কার্ড নিতে হাজারো মানুষ ভিড় করলে কলেজ গেইটে হাজারো মানুষ জমায়েত হয় এবং ভিড়ের চাপে গেইট ভেঙে মানুষ ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে মৃদু লাঠিচার্জ করে। এ সময় হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে দৈনিক সংবাদের উপজেলা সংবাদদাতা নুরুল আমিনসহ কয়েকজন আহত হন। আহতদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পরে আহতদের অবস্থার অবনতি হলে হাফিজ উদ্দিন (৬২), ফিরোজা খাতুন (৬৫) ও খোকনকে (৩২) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে হাফিজ উদ্দিন মারা যান।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী পুলিশের লাঠিচার্জ করার কথা অস্বীকার করে বলেন, বিশৃঙ্খল লোকজন গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে পদদলিতের ঘটনা ঘটে। এজন্য কয়েক ঘণ্টা কার্ড বিতরণ বন্ধ ছিল। পরে বিকেলে আবার পৌর কার্যালয়ে দুস্থদের মধ্যে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়।
ফুলপুর পৌরসভার মেয়র আমিনুল হক জানান, ঈদুল আযহা উপলক্ষে অসহায় দরিদ্রের মাঝে ১৫ কেজি চালের চার হাজার ৬২১ টি ভিজিএফ কার্ড বিতরণের কথা ছিল। দুপুর ১২ টার দিকে কার্ড নিতে আসা মানুষের লাইনে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ঘটনার সময় তিনি ঘরের ভেতরে ছিলেন এবং বাইরে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন হতাহতদের দেখতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। এঘটনার তদন্তে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।