দেশের ক্রিকেটের উন্নতি এবং রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী করতে রোটেশন পদ্ধতির কথা বললেন সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতার পর শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইওয়াশ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে খাদের কিনারায় ফেলে দিয়েছে। দল নিয়ে চিন্তিত সকলেই।
কোন দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট!! হঠাৎ করেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের গ্রাফটা নিম্নমুখী কেন!! খেলোয়াড়দের মধ্যে থেকে আত্মবিশ্বাসের এত অভাব কেন!! আসলে কি হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের? এমন প্রশ্নসহ আরও অনেক কিছুই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। চিন্তার তালিকা থেকে বাদ পড়েননি বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তাই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মুখ খুললেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। কি বললেন সাকিব?
সাকিব বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় সবসময় খেলতে পারবে না, তার বিশ্রাম প্রয়োজন। তখন দু’পক্ষ থেকেই দায়িত্ব নিতে হবে। যখন কোন খেলোয়াড় বলবে আমার বিরতি নেয়া উচিত বা কোচিং স্টাফ থেকে বলছে, তোমার এই ছুটি নেয়া উচিত। তখন সবারই সেটা বোঝা উচিত।’
ইংল্যান্ডে হয়ে যাওয়া দ্বাদশ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতা ছিলো চোখে পড়ার মত। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিলো টাইগাররা। কিন্তু বিধি-বাম, অষ্টম স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করতে হয় বাংলাদেশকে। শ্রীলংকা সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক কষেছিলো টাইগাররা। কিন্তু সেখানেও স্বপ্ন ভঙ্গ বাংলাদেশের। ইনজুরির কারণে শ্রীলংকা সফরে যেতে পারেননি মাশরাফি বিন মর্তুজা-মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজ থেকেই বিশ্রাম নেন সাকিব। এছাড়া সিরিজ চলাকালীন খেলোয়াড়দের ক্লান্তও দেখা গিয়েছে। তাই ক্রিকেট মাঠে সাফল্যের জন্য ভারতের মতো ‘বিশ্রাম-নীতি’ চান সাকিব। তিনি বলেন, ‘ভারতের একটা ভালো উদাহরণ দিতে পারি আমি। গেল বছর কম চোটে পড়েছে ভারতের খেলোয়াড়েরা। এর বড় কারণ হলো, তারা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাদের খেলোয়াড়কে খেলিয়েছে। এটাতে যা হয়েছে, তাদের অনেক খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। অনেকে খেলোয়াড় পরিচিতি পেয়েছে।’
রোটেশন পদ্ধতির কারনে ভারতের খেলোয়াড়রা ফুরফুরা মেজাজে খেলতে পেরেছে। যা থেকে দল উপকৃত হচ্ছে। সাকিব বলেন, ‘বিশ্রাম শেষে ফিরে তাদের খেলোয়াড়রা ফুরফুরে মেজাজে খেলতে পেরেছে এবং ভালো করতে পেরেছে। দেখা গেছে, বিরাট কোহলিসহ সবাইকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে সব ফরম্যাটেই।’
রোটেশন পদ্ধতির কারনে পাইপলাইনের অনেক খেলোয়াড়কে সুযোগও দেয়া যায় বলে জানান সাকিব, ‘যখন খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেয়া হবে, তখন অনেক খেলোয়াড়কে সুযোগ দেয়া যাবে এবং পাইপলাইন থেকে খেলোয়াড় বের হবে। তাই আমাদের এ ধরনের বড় পরিকল্পনায় যেতে হবে।’
বিশ্বকাপ চলাকালীনও ইনজুরিতে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের বেশক’জন খেলোয়াড়কে। ইনজুরি নিয়েও অনেকে খেলেছেন। কারণ তাদের বিকল্প হিসেবে কেউ খেললেও সেভাবে পারফরমেন্স করতে পারেননি। তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হলে সকলের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা কিছু করতে চাই, তবে কোচিং স্টাফ, বোর্ড ও খেলোয়াড়দের মধ্যে খুব ভালো একটা সমন্বয় গড়তে হবে। তা না হলে এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা তৈরি বা নেতিবাচক কথা তৈরি হবে।’
সাকিবের আশা, বিসিবি আগামী তিন-চার বছরের জন্য নতুন পরিকল্পনা সাজাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দু’জন প্রশিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি এবং তারা সবাই একত্রিতও হয়েছেন। এতে বিসিবি তাদের কৌশল পেশ করতে পারে। আমরা যদি এক সাথে কাজ করতে পারি, তবে আমার মনে হয়- গেল চার বছর আমাদের ক্রিকেট যেমন এগিয়েছিলো, ঠিক সেভাবেই এগিয়ে যেতে পারবে।’
সূত্র : বাসস