স্টাফ রিপোর্টার : টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি নদের দুই কূল ছাপিয়ে বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে ময়মনসিংহের সদর, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর, ত্রিশাল ও গফরগাঁও উপজেলার প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকার কমপক্ষে ১৩টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে গত কয়েক দিনে প্রবল ভাঙনের মুখে পড়ে জেলার তিন উপজেলার শতাধিক পরিবার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। পাকা সড়ক, গাছপালা, বাঁশঝাড়সহ কয়েকশ হেক্টর জমি নদীর পানিতে তলিয়ে বিলীন হয়ে গেছে।
এরই মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে সদর উপজেলার অষ্টাধর, সেনেরচর, ঝাপরকান্দা, ভাবখালী বাজার, কিসমত বাজার, ভাংনামারী, গৌরীপুর উপজেলার খোদাবক্সপুর, ত্রিশালের কালিরবাজার, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর, দত্তপাড়া, বটতলা, গফরগাঁও উপজেলার পৌর এলাকাসহ চরআলগী, চরমাদাখালী, মীরপাড়া, চরমছলন্দ, বালুয়াকান্দা, লামকাইন ও দত্তেরবাজারের প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী হাজারো ঘরবাড়ি, স্কুল, মাদ্রাসা-মসজিদ ও রেললাইন।
ব্রহ্মপুত্রের তেরটি পয়েন্টে ভাঙন, আতঙ্কে ঘর ছাড়ছেন বানভাসি মানুষ
প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়েছে নদের তীরবর্তী এলাকা (ছবি : দৈনিক অধিকার)
এ দিকে বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার সেনেরচর ও গফরগাঁওয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বন্যাকবলিত মানুষ। এ সময় তারা জানান, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে সদর উপজেলার সেনেরচর-অষ্টাধর বাজার পাকা সড়কের এক কিলোমিটারসহ শতবর্ষী গাছপালা, বাঁশঝাড় ও কয়েকশ হেক্টর জমি নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। সরিয়ে নিতে হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি। এছাড়া ভাঙনের আতঙ্কে শতাধিক পরিবার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
বন্যার ব্যাপারে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ৯শ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যায় পানির স্রোতে চলতি ভাঙন ঠেকাতে সদর উপজেলার অষ্টাধরে বালুর বস্তা ফেলার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পাউবোর ওই কর্মকর্তা।