জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আমাদের মাথার উপর ছাতাটি সরে গেছে, বট গাছটি আর নেই। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুধু আমার বড় ভাই ছিলেন না। উনি আমার পিতা, আমার শিক্ষক ছিলেন। ওনার কোলে চড়ে সিনেমা দেখেছি, উনি হাতে ধরে চামুচ দিয়ে খাওয়া এবং কিভাবে টাই বাঁধতে হয় শিখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি যখন রাজনীতিতে আসি তখন কিভাবে পরিবেশ ট্যাকেল দিতে হয়, সংকট মোকাবেলা করতে হয় শিখিয়েছেন। আপনারা ওনার জন্য দোয়া করবেন।
বুধবার বাদ আসর গুলশান আজাদ মসজিদে প্রয়াত এরশাদের কুলখানিতে তিনি আবেগময় কণ্ঠে এসব কথা বলেন। কুলখানিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এমপি, মোহাম্মদ নাসিম এমপি, প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি, সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজ এমপি, সত্তর দশকের কিংবদন্তী ছাত্রনেতা নুরে আলম সিদ্দিকী, জেপি সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী এবিএম গোলাম মোস্তফা, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আল আজাদ প্রমুখ।
জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে ছিলেন, বিরোধী দলের উপনেতা পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবুল, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, এ্যাড. শেখ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, এস.এম. ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, আজম খান, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, আলহাজ্ব আতিকুর রহমান আতিক, নাসরিন জাহান রতনা এমপি, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, রওশন আরা মান্নান এমপি, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সৈয়দ দিদার বখত, কাজী মামুনুর রশীদ, নাজমা আখতার এমপি ও প্রয়াত এরশাদের দুই পুত্র রাহাগির আল মাহি (সাদ এরশাদ) ও এরিক এরশাদ।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের সকল ধর্ম ও জাতির মানুষের কল্যাণে অবদান রেখেছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত ছিলো পল্লীবন্ধুর সকল কর্মকান্ড। তাই এরশাদের ৪টি জানাজায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিলোনা। লাখো মানুষ তার জানাজায় অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে পল্লীবন্ধুর প্রতি তাদের ভালোবাসা।
তিনি বলেন, প্রতি মুহুর্তে এরশাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে তিনি এরশাদের জন্য দোয়া করার জন্য দেশবাসীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জিএম কাদের বলেন, আজকে খেলার যে অর্জন তার বীজবপন করেছেন উনি বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করে। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ওনার বীজটাকে লালন করার জন্য। আওয়ামী লীগ গ্রামকে শহর করার কথা বলছে এর গোড়াপত্তন করেছেন এরশাদ উপজেলা প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি বলেন, একটি মানুষের অবদান অর্জন বোঝা যায় তার মৃত্যূর পর জানাজায় লোক সমাগম দেখে। ওনার চারটি জানাজা হয়েছে কোনটিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। একটির চেয়ে আরেকটি সমাগম বেশি হয়েছে। এতে বোঝা যায় ওনার নীতি কর্ম মানুষ গ্রহণ করেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, আমার ভাই যখন হাসপাতালে তখন প্রতি ঘণ্টায় খোঁজ খবর নিয়েছেন। সম্মিলিত সমারিক হাসপাতালের ডাক্তাররা রাতদিন কাবার করে কাজ করেছে। ওনারা নিজের বাবার মতো করে সেবা করেছেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, রাজনীতিতে মত ও পথের অমিল ছিলো। কিন্তু আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে শ্রদ্ধা করতাম।
তিনি বলেন, তিনি আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। তিনি আরো বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একজন বিনয়ী মানুষ ছিলেন, মার্জিত স্বভাবের অধিকারী ছিলেন তিনি। তিনিও পল্লীবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, দেশ ও মানুষের প্রতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মমত্ববোধ অতুলনীয়। আমি তার ব্যবহারে মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়েছি। একজন সাহিত্যিক হিসেবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। শিশুদের প্রতি তার ভালোবাসা অসাধারণ। তিনি এরশাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন।