এবারের বিশ্বকাপের মঞ্চে বেশ কিছু তরুণ ক্রিকেটার চোখ টানলেন। তবে সেমি-ফাইনালে ওঠা চারটি দলের মধ্যে নতুন মুখের সাফল্য কম।
অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে অ্যালেক্স কেরি ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জিতে নিয়েছেন। দশটি ম্যাচে তিনি করেছেন ৩৭৫ রান। মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন অজি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিনি সর্বাধিক ৮৫ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭১ রান করে আউট হয়েছিলেন কেরি। ভারতের বিরুদ্ধে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে সকলের নজর কেড়েছিলেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের জিমি নিসাম অলরাউন্ডার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমে তিনি নিউজিল্যান্ডকে জুগিয়েছেন বাড়তি ভরসা। তাই প্রথম পাঁচটি ম্যাচে জিতেছে তারা। ন’টি ম্যাচে জিমি নিশামের সংগ্রহ ২১৩ রান। ১২টি উইকেটও নিয়েছেন। রোববার, ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিশাম হয়ে উঠতে পারেন নিউজিল্যান্ডের তুরুপের তাস।
বিশ্বকাপে ১৮ বছরে বয়সে সর্বাধিক রানের যে রেকর্ডটি এতদিন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচিন টেন্ডুলকারের ছিল, তা ভেঙে দিয়েছেন আফগানিস্তানের ইকরাম আলি খিল। ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮৪ রান করেছিলেন শচিন। গত বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৯২ বলে ৮৬ রান করেছেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইকরাম। তিনি জানিয়েছেন, ‘শচীনের মতো কিংবদন্তির রেকর্ড ভাঙতে পেরে একইসঙ্গে আমি অত্যন্ত খুশি এবং গর্বিত।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, শচিন নন, তার আইডল হলেন শ্রীলঙ্কার বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারা। ইকরাম বলেছেন, ‘সাঙ্গাকারাকেই আমি সব সময় অনুসরণ করি।’ ইকরাম দলের হয়ে সর্বাধিক রান পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি আফগানিস্তান। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ইকরাম ছিলেন আফগানিস্তান দলের অন্যতম সদস্য। আফগানিস্তান সেমি-ফাইনালে উঠেছিল।
শেষ মুহূর্তে ডাক পেয়ে ইংল্যান্ডের জোরে বোলার জোফ্রা আর্চার প্রচন্ড গতিতে বল করার জন্য সকলের নজর কেড়েছেন। এবারের বিশ্বকাপে তিনি নিয়েছেন ১৭টি উইকেট।
পাকিস্তান বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন গ্রুপ লিগ থেকে ছিটকে গেলেও বিশ্বমঞ্চে রেকর্ড গড়েছেন পাকিস্তানের পেসার শাহিন আফ্রিদি। তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে সবথেকে কম বয়সি ক্রিকেটার হিসেবে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচে মোট ছয় উইকেট পান শাহিন। এবারের বিশ্বকাপে তিনিই একমাত্র বোলার যিনি এক ম্যাচে ছ’টি উইকেট পেয়েছেন। শাহিন আফ্রিদি এই রেকর্ড সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। ম্যাচের পর বলেন, ‘এই পারফরম্যান্স অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছে। ৩৫ রানে যে ছয় উইকেট পাব তা কখনো ভাবিনি। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর নিজের ছন্দ খুঁজে পেয়েছিলাম। তবে কখনো ভাবিনি লর্ডসে এই রকম পারফরম্যান্স করব। আমার চোখে ক্রিকেটের তীর্থক্ষেত্র লর্ডস। এই পারফরম্যান্সে আমার পরিবারও গর্বিত। এই রকম পারফরম্যান্স করেও স্রেফ নেট রান রেটের জন্য সেমি-ফাইনালে যেতে না পারায় মন খারাপ লাগছে। তবে এটাই আমার প্রথম বিশ্বকাপ। ভবিয্যতে এই পারফরম্যান্স আরো ভালো খেলতে অনুপ্রেরণা দেবে।’
উল্লেখ্য, পাক পেসার শাহিন আফ্রিদির বয়স মাত্র ১৯ বছর ৯০ দিন। শাহিন বলেছেন, ‘প্রথম চারটি ম্যাচে আমি তেমন বল করতে পারিনি। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে বল করেছি। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি আমাদের জেতা উচিত ছিল। সেদিন লোয়ার মিডল অর্ডার একটু ধরে খেললেই আমরা জিতে যেতাম। সেদিন শেষ চারটি উইকেট আমরা দ্রুত হারাই।’