মিরপুর রোড ও গ্রীণ রোডের ‘অর্ঘ্য’ রক্ষায় ১৭ বিশিষ্ট নাগরিকের আবেদন

জাতীয় অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, কলামিস্ট, নাট্যকার ও বুদ্ধিজীবিসহ দেশের ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক ‘অর্ঘ্য’ নামের এক প্রাকৃতিক পার্ক রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। ঢাকা মহানগরীতে মিরপুর রোড ও গ্রীণ রোডের সংযোগস্থলে গড়ে উঠেছে ‘অর্ঘ্য’ নামের এ প্রাকৃতিক পার্ক প্রায় ২২ শতাংশ জায়গার উপর গড়ে উঠেছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক এ আবেদন জানান। বিবৃতি দানকারীরা হলেন- জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, লেখক ও সামাজিক আন্দোলন কর্মী সৈয়দ আবুল মকসুদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, শিক্ষক ও নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নাট্যকার ও অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার. নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ , কবি নির্মলেন্দু গুণ. সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, গোলাম কুদ্দুস ,নাসির উদ্দিন ইউসুফ. যাদু শিল্পী জুয়েল আইচ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, আইনজীবি মঞ্জিল মোরশেদ, স্থপতি ইকবাল হাবীব, প্রকৃতি ও নগর সৌন্দর্যবিদ রাফেয়া আবেদীন, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মোঃ আব্দুল মতিন।
বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেন, ইট পাথরের এ ঢাকা মহানগরীতে মিরপু রোড ও গ্রীণ রোডের সংযোগস্থলে গড়ে উঠেছে ‘অর্ঘ্য’ নামের এক প্রাকৃতিক পার্ক। প্রায় ২২ শতাংশ জায়গার উপর গড়ে উঠা এই পার্কে বাসা বেঁধেছে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রজাপতি এবং পাখিদের দল। ফুটে আছে অসংখ্য প্রজাতির ফুল।এটি একটি কীট পতঙ্গের আধার। গ্রীল দিয়ে ঘেরা এই পার্কটি প্রজাপতি, টিয়া পাখি, গাছ-গাছালি, কৃত্রিম লেক ও ছোট টিলায় প্রাণীদের-এ অভয়ারণ্য নগর জীবনের এক বৈচিত্রপূর্ণ সম্পদ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়ে ২০০৬ সালে এ পার্কটি গড়ে তোলেন প্রকৃতি ও নগর সৌন্দর্যবিদ রাফেয়া আবেদীন। নাগরিক সমাজের সহায়তাই তার এ কাজের মূল শক্তি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন নান্দনিক সৌন্দর্যের এ পার্কটিকে পার্শবর্তী জমির মালিক ‘বিআরবি কেবলস’ নামক একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে বরাদ্দ দেয়ার সংবাদে আমরা বিষ্মিত, হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। ওই প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে এই জায়গাটি ব্যবহার করবে, বিদ্যমান প্রজাপতি ও পাখিদের তাড়িয়ে দেয়া হবে, প্রাণীকুল মারা পড়বে -এ দুষ্কর্ম কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এক বছর আগে এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়, জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। আদালতের কারণ দর্শাও নোটিশের কোন জবাবও তারা দেয়নি। এখন আবার ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি এ জায়গাটি দখলে নিচ্ছে। উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্যকরণ বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
সর্বজনবিদিত যে, সায়েন্স ল্যাবরেটরী সংলগ্ন এই মোড়টির যানজট প্রায় সার্বক্ষনিক। এখানে কোন ব্যবসা ভিত্তিক বহুতল ভবন হলে তীব্র যানজটে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে, দিশেহারা হবেন ধানমন্ডি- গ্রীণ রোডের বাসিন্দা ও সকল শ্রেণীর জনগণ। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এ প্রাকৃতিক পার্কটি রক্ষা করার আবেদন জানাই।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top