দলের সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান আমীর মকবুল আহমাদ আজ বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এম. আলম স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো :
‘শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম। বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি চালুর ক্ষেত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন।
গত ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিঃ সরকার সাজানো মিথ্যা মামলায় বায়বীয় অভিযোগে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে।
চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক কৃষি ও শিল্প মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে দক্ষতা, সততা স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছেন তা বাংলাদেশের জনগণ কখনো ভুলবে না। তিনি ইসলামী আন্দোলনের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের নিকট ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। বর্তমান সরকার এ রকম একজন সৎ, আল্লাহভীরু ও দেশপ্রেমিক দক্ষ জাতীয় নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে।
শহীদ মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে যে সব বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে পারেনি। তিনি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার পূর্বে কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় তার সাথে নিকৃষ্ট আচরণ ও অবিচার করা হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাননি। কারণ প্রাণের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
শহীদ মাওলানা নিজামীকে হত্যা করে যারা জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করার স্বপ্ন দেখেছেন, তাদের সে স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। তার প্রতি ফোঁটা রক্ত এ দেশের গণতন্ত্রমনা ইসলামী জনগণকে উজ্জীবিত করবে, ইনশাআল্লাহ। সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যা করে যে কলংকিত ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
শহীদ মাওলানা নিজামী এখন আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তিনি যে, ইসলামী আদর্শের জন্য জীবন দিয়েছেন তা শ্বাশত ও চিরন্তন। এ আদর্শ কায়েমের জন্যই তিনি সারাটা জীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। তার দেখানো পথে ইসলামী সমাজ কায়েমের আন্দোলনকে যদি আমরা সফল করতে পারি তাহলেই তার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে।
তাই আসুন, শহীদ মাওলানা নিজামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা শপথ গ্রহণ করি যে, এ দেশে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।
আমি মাওলানা নিজামীর শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমীন।’