কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে রাজধানীর কল্যাণপুরে সড়ক অবরোধ করেছে নার্সরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ থেকে কল্যাণপুর ইবনে সিনা মেডিকেলের সামনে সড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা।
এ সময় তারা তানিয়ার বিচার দাবিসহ ঘাতকদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনকারীদের একজন নুসরাত ইয়াসমিন জানান, ‘আমাদের দাবি একটাই। ঘাতকদের ফাঁসি চাই। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়ায় দিনকে দিন এসব ঘটনা বাড়ছে।’
শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল জলিল জানান, সড়ক অবরোধের বিষয়টি আমাদের জানা নেই, খোঁজ নিচ্ছি।
ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়া গত সোমবার বিকালে নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে আসার পর তানিয়া ব্যতীত বেশির ভাগ যাত্রী বাস থেকে নেমে পড়ে। বাসটি কটিয়াদী ছাড়ার পর তানিয়া বাসটির ড্রাইভার, হেলপারসহ কয়েকজনের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হন।
একপর্যায়ে অভিযুক্তরা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তানিয়াকে হত্যা করে। পরে লাশ কিশোরগঞ্জ-ভৈরব পাকা সড়কে বাজিতপুর উপজেলার গজারিয়া-বিলপাড় নামক স্থানে ফরিদ মিয়ার কলাবাগানের সামনে ফেলে আসামিরা বাস নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আল আমিন নামে একজন তানিয়ার লাশ কটিয়াদী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে সটকে পড়ে।
পরদিন মঙ্গলবার নিহত তানিয়ার বাবা কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মো: গিয়াসউদ্দিন বাদী হয়ে চারজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন একটি মামলা দায়ের করেন। বাসের ড্রাইভার ও হেলপার ছাড়াও আর যে দুজনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয় তারা হলেন- কাপাসিয়া উপজেলার ভেঙ্গুরদি গ্রামের আল আমিন (২৮) ও বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৭)।
এদিকে, বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে পাঠালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন প্রত্যেকের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সালুয়াটাকি গ্রামের বাস ড্রাইভার নূরুজ্জামান নূরু (৩৯), বীর উজলী গ্রামের বাসের হেলপার লালন মিয়া (৩২), লোহাদী গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফিক (৩০), কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভোগপাড়া গ্রামের খোকন মিয়া (৩৮) ও বাজিতপুর উপজেলার নীলক্ষি গ্রামের বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল (৫০)।