অবিশ্বাস্যভাবে বার্সাকে বিদায় করে ফাইনালে লিভারপুল

ঢাল-তলোয়ার ছাড়া মঙ্গলবার অ্যানফিল্ডে যেন নিধিরাম সর্দার হয়েই নেমেছিলেন জুর্গেন ক্লপ। ৩ গোলে পিছিয়ে থাকা জার্মান কোচের হাতে এদিন ছিল না আপফ্রন্টে সালাহ-ফিরমিনোর মতো দুই তুরুপের তাস। তবে যা ছিল তা হল ঘরের মাঠের প্রবল জনসমর্থন, দলের ১১ জন ফুটবলার আর তার প্রখর ফুটবল মস্তিষ্ক। সম্ভবত এই তিনেই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তিনি।

প্রথম লেগে নু ক্যাম্পে বার্সেলোনার কাছে ০-৩ গোলে পিছিয়ে থাকা দলটাই ফিরতি লেগে বাজিমাত করে গেল ৪-০ গোলে। একইসঙ্গে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্রবেশ করল পাঁচবারের ইউরোপ সেরা লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে রেডসরা যে মরণকামড় দেবে, সে সম্পর্কে অবগত ছিলেন ফুটবল অনুরাগীরা। কিন্তু এহেন প্রবল প্রত্যাঘাতের আঁচ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কাতালান ক্লাবটি। নইলে হয়তো গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টারে রোমার কাছে অপ্রত্যাশিত হার থেকে শিক্ষা নিতেন পিকে-বুসকেটসরা।

সালাহ-ফিরমিনোর অনুপস্থিতিতে লিভারপুলের আপফ্রন্টে ম্যাচের শুরুতে এদিন ওরিগি ম্যাজিক। অধিনায়ক হান্ডারসনের গোলমুখী শট টার স্টিগেন প্রতিহত করলে ওত পাতা শিকারির মতো ফিরতি বল জালে রাখেন ডিভোক ওরিগি। তবে গোলটির পিছনে ছিল লিভারপুলের টিমগেমের ফসল। পিছিয়ে পড়ে প্রথমার্ধে একাধিকবার গোল করার মতো অবস্থায় পৌঁছে যায় বার্সা। কিন্তু কখনো মেসি কখনো কুটিনহোকে আটকে যেতে হয় লিভারপুলের ব্রাজিলিয় গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের বিশ্বস্ত দস্তানায়। প্রথমার্ধের অন্তিম সময় জর্ডি আলবার অবধারিত গোল বাঁচিয়ে যেন লিভারপুলের লড়াইয়ের আরো ইন্ধন দেন তিনি।

ফলও মিলে যায় হাতেনাতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আহত অ্যান্ডি রবার্টসনের পরিবর্ত জর্জিনিয়ো উইনালডামের জোড়া ফলায় বিধ্বস্ত হয় বার্সা রক্ষণ। ৫৪ মিনিটে প্রথমে আলেকজান্ডার আর্নল্ডের ক্রস থেকে দুরন্ত ভলি, ঠিক দু’মিনিট বাদে শাকিরির ক্রস থেকে নিজেকে উচ্চতার শীর্ষে নিয়ে গিয়ে এগ্রিগেটে দলকে সমতায় ফেরান ডাচ ফুটবলার। শুরু হয় বার্সার পিঠ বাঁচানোর লড়াই। যদিও অ্যাওয়ে ম্যাচে যেকোনো মূল্যে একটি গোল তাদের পৌঁছে দিতে পারত ফাইনালে।

তবে শেষ অবধি গোল তো আসেইনি, উলটে ৭৯ মিনিটে বার্সার মন্থর ফুটবলের সুযোগ নেয় রেডসরা। বার্সা ফুটবলাররা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আলেকজান্ডার আর্নল্ডের সুযোগসন্ধানী কর্নার থেকে গোল করে যান ওরিগি। নু-ক্যাম্পের যোগ্য পালটা অ্যানফিল্ডে দিয়ে ফাইনালের যাওয়ার ছাড়পত্র আদায় করে নেয় লিভারপুল। অন্যদিকে প্রথম লেগে বিশ্বমানের ফ্রি-কিক সহ মেসির জোড়া গোল মূল্যহীন হয়েই রয়ে যায়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top