সোমবার পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। মুসলমানদের ফরজ বা বাধ্যতামূলক (প্রাপ্ত বয়ষ্ক) ইবাদত এটি। নবী করীম (স.) রমযানের মহত্ব ও ফযীলত বয়ান করতে গিয়ে বলেছেন, যখন রমযানের প্রথম রাত আসে, তখন শয়তান ও অবাধ্য জ্বিনগুলোকে শৃঙ্খল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এবং দোযখের সকল দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। তার কোনো একটি দরজাও খোলা রাখা হয় না। জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেয়া হয়। তার কোনো একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। তারপর আল্লাহর একজন আহ্বানকারী বলতে থাকে, যারা মঙ্গল ও কল্যাণ চাও তারা সামনে অগ্রসর হও। যারা বদকাম পাপাচার করতে চাও, তারা থাম। তারপর আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক না-ফরমান বান্দাহকে দোযখ থেকে রেহাই দেয়া হয়। আর এ কাজ রমযানের প্রত্যেক রাতেই করা হয়। (তিরমিযিন, ইবনে মাজাহ)
পবিত্র রমজানের গুরুত্ব বর্ণনায় পবিত্র হাদিসে বলা হয়েছে, ‘এ এমন একটি মাস যে মাসে মু’মিনদের রুযি বৃদ্ধির করা হয়।’ (মিশকাত)
‘রমযান সকল মাসের সরদার’। (ইলমুল ফেকাহ)
‘এ মাসের প্রথম অংশ রহমত, দ্বিতীয় অংশ মাগফেরাত, তৃতীয় এবং শেষ অংশ জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই ও মুক্তি’। (মিশকাত)
‘এ মাসে যদি কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে আপন ইচ্ছায় কোনো নফল নেকী করে সে অন্যান্য মাসের ফরয ইবাদাতের সমান সওয়াব পাবে। আর যে একটি ফরয আদায় করবে সে অন্যান্য মাসের সত্তরটি ফরযের সমান সওয়াবের হকদার হবে’। (মিশকাত)
ইতিহাসে রমযানের মহত্ব ও গুরুত্ব
কুরআন নাজিলের মাস রমজান। এই মাসেই পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। হক ও বাতিলের প্রথম সিদ্ধান্তকর যুদ্ধ (বদর) এ মাসেই হয়েছিল এবং বাতিলকে পরাজিত করে হক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। হককে বাতিল থেকে আলাদা করে দেয়ার দিনকে পবিত্র কুরআনে ‘ইয়াওমুল ফোরকান’ বলা হয়েছে, তা ছিল এ মাসেরই একটি দিন। এ দিনেই হকের প্রথম বিজয় সূচীত হয় এবং বাতিল পরাজিত হয়। ইতিহাস একথাও বলে যে, এ মাসেই মক্কা বিজয় হয়। সুতরাং মাহে রমজানের গুরুত্ব মুসলমানদের কাছে অপরিসীম। আল্লাহ আমাদের প্রাপ্ত বয়ষ্ক সকল মুসলমানকে সঠিকভাবে রোজা রাখার তৌফিক দিন।