বাংলাদেশে আইনের প্রয়োগ বিএনপির ক্ষেত্রে এক রকম এবং সরকারের লোকদের ক্ষেত্রে অন্যরকম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বার কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যেগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি,শারীরিক সুস্থতা ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জনাব এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার আশু রোগ মুক্তি কামনায় আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন ।
ব্যারিষ্টার মওদুদ বলেন, যদি আইনকে স্বতন্ত্রভাবে চলতে দেয়া হতো এবং সেটার সঠিক প্রয়োগ থাকতো তাহলে বেগম জিয়া অনেক আগেই মুক্তি পেতেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়া যে মামলায় কারাবন্দী এটা সম্পুর্ন একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত মামলা। তার সাথে যা কিছু করা হচ্ছে যত প্রকার অবিচার করা হচ্ছে সেগুলো সবই রাজনৈতিক।
রাজনৈতিক কারনেই বেগম জিয়ার মুক্তি হচ্ছে না। বেগম জিয়া সরকারের সাথে কোন ধরনের মিথ্যার বিরুদ্ধে আপোষ করবেন না। বেগম জিয়া অসুস্থ ঠিকই কিন্তু তিনি মানষিকভাবে খুবই শক্ত আছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় যদি বেগম জিয়ার জামিন না হয় এবং তাকে মুক্তি করতে না পারি তাহলে অবশ্যই আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা হবে ইনশাআল্লাহ !
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সানাউল্লাহ মিয়ার মননোয়নের ব্যাপারে আমরা খুব মর্মাহত আমরা স্থায়ী কমিটির মননোয়ন বোর্ডে যারা ছিলাম তারা তাকে মননোয়ন দিয়েছিলাম। কিন্তু কেন জানি সেটা পরিবর্ত করে দেয়া হলো। সানাউল্লাহ দলের জন্য অনেক কিছু করেছেন তার অনেক অবদান রয়েছে যেটা লক্ষনীয়। কিন্তু তার সাথে দলের পক্ষ থেকে নিষ্ঠুর অবিচার করা হয়েছে।
দোয়া মাহফিলে বক্তব্যের শুরুতে মওদুদ মজা করে সাবেক স্পীকার এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাননীয় স্পীকার যদি অনুমতি দেন তাহলে আমি কিছু বলি।
দোয়া মাহফিলে জমির উদ্দিন সরকার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বেগম জিয়া তিনবার রাষ্ট্রপরিচালনা করেছেন এবং তিনি সঠিকভাবেই গনতন্ত্রের চর্চা করেছেন এবং দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একজন নেত্রী। কিন্তু বর্তমানে দেশের সংবিধান এবং গণতন্ত্র দুটোই বিপন্ন।
তাকে যেসব মামলায় জড়িয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এগুলো জামিন যোগ্য মামলা। সুতরাং সরকার রাজনৈতিকভাবে যদি তাকে আটকে না রাখে তাহলে তার মুক্তির কোন বাধা থাকবে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
সভাপতির বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের গনমানুষের নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭ টি মামলা। ১/১১ এর সময় বেগম জিয়া এবং শেখ হাসিনা দুজনের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছিল কিন্তু সেটা তার নিজস্ব ক্ষমতা বলে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সংসদ যাওয়া না যাওয়ার সাথে বেগম জিয়ার মুক্তির কোন সম্পৃক্ততা নেই। যেটা মানুষ বলেছে সেটা সরকারের কোন মহল থেকে সৃষ্টি একটা গুজব। বেগম জিয়া যদি সুস্থ হয় এবং বাঁচেন তাহলে দেশ বাঁচবে আর যদি তিনি সুস্থ না হয় এবং মুক্তি না পান। তাহলে অসুস্থ দেশ অসুস্থই থেকে যাবে।
কেন আজ সানাউল্লাহ মিয়ার এই অবস্থা? ভবিৎষতে যেন আর কারো সানাউল্লাহ মিয়ার মত না হতে হয় সেজন্য বিএনপির নীতিনির্ধারকের প্রতি দৃষ্টি আকর্শন করছি।
দোয়া মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জনাব খোরশেদুল আলমগীর, নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব সাখাওয়াত হোসেন, জুলফিকার আলী ঝুনু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সম্পাদক এডভোকেট সাইফুল ইসলাম, কোষাদক্ষ জনাবা নাসরিন আক্তার সহ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।