অবশেষে বাজারে এলো আফ্রিদির গেম চেঞ্জার

ভক্তদের দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে প্রকাশিত হলো পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডর শহীদ আফ্রিদির আত্মজীবনীমূলক বই ‘গেম চেঞ্জার’। বুধবার করাচিতে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন হয়। বইট লিখতে আফ্রিদিকে সাহায্য করেছেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক ওয়াজাহাত খান। বইটি প্রকাশ করেছে বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা হার্পার কলিন্স।

বইতে আফ্রিদি খেলোয়াড়ি জীবনের ঘটনাবহুল তথ্য ও ব্যক্তিগত জীবনের রসায়ন ছাপার অক্ষরে তুলে ধরেছেন পাঠক-সমার্থকের জন্য। বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে ক্যারিয়ারের অনেক ঘটনা, যা ভক্তদেরও অজানা। তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন চিত্রাকর্ষক অভিজ্ঞতা ও বিতর্কিত বিষয়গুলো।

প্রকাশিত হওয়ার প্রথম দিনেই বইটি হইচই ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানে। কারণ, এই বইতে হইচই ফেলার মতো অনেকগুলো বিষয় তুলে ধরেছেন এই ক্রিকেটার।

আত্মজীবনী বইতে আফ্রিদি বলেন, সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার ও কোচ জাভেদ মিয়াঁদাদ তাকে পছন্দ করেননি এবং তার ক্যারিয়ার শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন, মিয়াঁদাদ তাকে লাঞ্ছিত করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল।

আফ্রিদি মিয়াঁদাদকে তার বইয়ে আরো লিখেছেন, কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান মিয়াঁদাদ তার ব্যাটিং স্টাইল পছন্দ করেননি এবং প্রায়ই তাকে ব্যাটিং স্টাইল পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিলেন।

এই বইতে লেখা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াকার ইউনুস ছিলেন একজন অপারদর্শী অধিনায়ক। ওয়াসিম আকরামকে অধিনায়ক না বানিয়ে ওয়াকারকে চক্রন্ত করে অধিনায়ক বানানো হয়।

২০১০ সালের স্পট ফিক্সিং নিয়েও অনেক কথা বলেছেন বুম বুম তার বইতে। তবে ক্যাপ্টেন হিসেবে ইমরান খানকে বানিয়ে দিয়েছেন সুপার স্টার। আফ্রিদি তার বইতে লিখেছেন, ইমরান খান অনেক বড় মাপের একজন লিডার সেটা খেলোয়াড়ি জীবনে কিংবা রাজনৈতিক জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে।

ক্রিকেটে অসম্ভবকে সম্ভব করাই ছিল যার কাজ। বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে, এক হাতে চেঞ্জ করে দিতেন খেলার চেহারা। ব্যক্তিগত জীবনেও আফ্রিদি অনেক সফল মানুষ। সেই আলোকেই ক্রিকেটীয় এবং ব্যক্তিগত জীবনের ধরণের সাথে মিল রেখে আত্মজীবনীর নামটাও রেখেছেন, ‘গেম চেঞ্জার’।

এই মারকুটে ব্যাটসম্যানের অনেক অব্যক্ত কথা ব্যক্ত করেছেন এই বইতে।

১৯৯৬ সালে অভিজ্ঞ স্পিনার মুশতাক আহমেদের ইনজুরির কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সে দলে ডাক পান আফ্রিদি। অভিষেক একজন লেগস্পিনার হিসেবে দলে নেয়া হলেও, ব্যাট চালিয়ে খেলতেই বেশি উপভোগ করতেন আফ্রিদি। বিশাল বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে বনে যান ছাক্কার রাজাও। ১৯৯৭ সালে নাইরোবিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ওডিআইতে তিন নাম্বার পজিশনে ব্যাট করার সুযোগ পান এই হিটার। সেই ম্যাচেই খেলেন অবিশ্বাস্য ৩৭ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার রেকর্ড। তার এই রেকর্ডটি ১৭ বছর পর্যন্ত কেউ ভাঙ্গতে পারেনি।

পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ২৭টি টেস্ট, ৩৯৮টি ওডিআই ও ৯৯টি টি-টোয়েন্টি। আফ্রিদি ব্যাট হাতে ১১ হাজার ১৯৬ রানের পাশাপাশি নিয়েছেন ৫৪১টি আন্তর্জাতিক উইকেট। ঝুলিতে রয়েছে ১১টি শতক ও ৫২টি অর্ধশতক। তিন ফরম্যাটে ছক্কা রয়েছে ৪৭৬টি। গৌরব অর্জন করেন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দেয়ার।

২০ বছরের আন্তার্জাতিক ক্যারিয়ারসহ ব্যাক্তিগত ৩৯ বছর জীবনের অনেক জানা-অজানা ঘটনার সাক্ষী এই বই।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top