বিশ্বকাপে সর্বকালের সেরা দলে নেই শচিন, ধোনি!

পছন্দের সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ দল বেছে নিলেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদি। সেই তালিকায় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি থাকলেও আশ্চর্যজনক ভাবে ঠাঁই হয়নি শচিন টেন্ডুলকার এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো ক্রিকেট লেজেন্ডের! এখন দেখে নেওয়া যাক আফ্রিদির সেই তালিকায় রয়েছেন কারা।

সাঈদ আনোয়ার: নব্বইয়ের দশকের বিশ্বের অন্যতম সেরা বাঁ হাতি ওপেনার। আমির সোহেলের সাথে আনোয়ারের ওপেনিং জুটি সেই সময় ত্রাস ছিল অনেক দলের কাছেই। ১৯৯৬, ১৯৯৯ এবং ২০০৩-এর বিশ্বকাপ খেলেছেন আনোয়ার। ২১ ম্যাচে মোট ৯১৫ রান করেন। সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ১১৩। ১৯৯৭-এ উইজডেনের বিচারে বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন।

অ্যাডাম গিলক্রিস্ট: বিশ্বকাপ ইতিহাসে ৫০টি বেশি ডিসমিসালের জন্য শীর্ষ স্থানে ছিলেন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় স্থানে। বিশ্বকাপের একটি ইনিংসে সরফরাজ আহমদের সাথে সর্বাধিক ডিসমিসালের (৬) যৌথ রেকর্ডও রয়েছে তার। তার অধিনয়াকত্বে ১৫টি ওয়ানডের মধ্যে ১১টি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।

রিকি পন্টিং: ২০০৩ ও ২০০৭-এর বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বলা হয় তাকে। দশকের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সফল অধিনায়ক রিকি পন্টিং। তার নেতৃত্বে ৩২২টি ম্যাচের মধ্যে ২১৯টি ম্যাচ জেতে অস্ট্রেলিয়া।

বিরাট কোহলি: একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিনটে আইসিসি পুরস্কার পেয়েছেন। প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৫২ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার রেকর্ড রয়েছে তার। আন্তর্জাতিক এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুততম ১০ হাজার রানের অধিকারী বিরাট। ওয়ানডেতে ৩৫টি সেঞ্চুরি রয়েছে তার। তিনিই আফ্রিদির দলের একমাত্র ভারতীয়।

ইনজামাম উল হক: ক্রিকেট দুনিয়ায় ইনজি নামেই বেশি পরিচিত। ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নজর কেড়েছিলেন। নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তান দলের ব্যাটিং স্তম্ভ ছিলেন তিনি। ২০০৩-এ অধিনায়ক হন। ২০০৭-এ পাকিস্তান বিশ্বকাপ হারার পর তিনি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন।

জ্যাক কালিস: বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান রয়েছে তার। ওয়ানডে ও টেস্ট মিলিয়ে ২৫০টি উইকেট নিয়েছেন। ওয়ানডেতে ১৩১টি ক্যাচও নিয়েছেন তিনি। ২০০৮-এ উইজডেনের বিচারে বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন।

ওয়াসিম আকরাম: বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঁ হাতি বোলার। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে বিবেচিত হন আকরাম। ৩৫৬টি ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ২৩ বার ৪টি বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে তার।

গ্লেন ম্যাকগ্রা: বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট মিডিয়াম পেস বোলার। জেমস অ্যান্ডারসনের পর অন্যতম সফল ফাস্ট বোলার ম্যাকগ্রা। ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনালে ৩৮১টি উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে তার। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৭১টি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

শেন ওয়ার্ন: বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার। ১৯৯৪-এ উইজডেনের বিচারে বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে ১ হাজারের বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে তার।

শোয়েব আখতার: বলের গতির জন্য শোয়েবকে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলা হত। ২০০৩-এর বিশ্বকাপে ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার বেগে বল করার আন্তর্জাতিক রেকর্ড রয়েছে তার। ১৯৯৩ এবং ২০০৩-এর বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি।

সাকলাইন মুস্তাক: বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা স্পিনার। তার ‘দুসরা’ ডেলিভারি ছিল বিশ্ববিখ্যাত। ১৯৯৫-২০০৪ সালের মধ্যে ৪৯টি আন্তর্জাতিক টেস্ট ও ১৬৯টি ওয়ানডে খেলেছেন।

উপরোক্ত সেরা একাদশ বেছে নিলেন পাকিস্তানের সুপারসনিক গতির আফ্রিদি। তবে একাদশের বাইরে থাকা শচিন ও ধোনির বিশ্বকাপ বিশ্লেষণ নিচে দেয়া হলো।

শচিন টেন্ডুলর: ছ’টি বিশ্বকাপ খেলেছেন শচিন। যার মধ্যে ১৬টি হাফ সেঞ্চুরি এবং ৬টি সেঞ্চুরি রয়েছে। ৪৪টি ইনিংসে তার সংগৃহীত রান ২২৭৮। ব্যাটিং গড় ৫৬.৯৫। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বকাপে শচিনের যা ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে, তার পরেও এই তালিকা থেকে বাদ পড়াটা সত্যিই আশ্চর্যজনক।

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি: ভারতীয় দলের সেরা ফিনিশার বলা হয় মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। শুধু ব্যাট হাতে নয়, উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে একের পর এক ব্যাটসম্যানের ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন। তার নেতৃত্বেই ২০১১ এর বিশ্বকাপ জেতে ভারত। এমন এক ক্রিকেটারের সর্বকালীন সেরা দল থেকে বাদ পড়াটাও অত্যন্ত আশ্চর্যের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top