কারো সাথে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই : এসপি হারুন

নারায়ণগঞ্জে ভূমিদস্যু, চাঁদবাজ, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। আমাদের সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, আমাদের অভিযান খারাপ লোকজনের বিরুদ্ধে। যারা আমার ভাইয়ের পকেটে ইয়াবা ঢুকাতে চায়, যারা মানুষের জমি অবৈধভাবে দখল করতে চায়, মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। কেউ যাতে অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি না করতে পারে সেদিকে আমরা অবশ্যই খেয়াল রাখবো।

‘মহান মে দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসপি হারুন এসব কথা বলেন। বিভাগী শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মহান মে দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, উন্নয়নের শপথ করি।’

পুলিশ সুপার বলেন, যদি কেউ মনে করে থাকেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন কাজ নেই, তবে আপনার বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। নারায়ণগঞ্জে মানুষ ব্যবসাবান্ধব। সেলিম ওসমান যেমন কদিন আগে বলেছেন সন্ত্রাসীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। আমরাও সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা কোন সন্ত্রাসীদের ছাড় দিচ্ছি না। কোথায় কী হচ্ছে এসব ব্যাপারে চোখ-কান খোলা রাখবেন।

তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, মাদকের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমাদের এক থাকতে হবে। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন, আপনাদের বিপথে পরিচালিত করার জন্য আপনাদের কাছে ইয়াবা, মাদক দেবে। এদের বিষয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন। এদেরকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আমি আপনাদের সাথে আছি। কোনো গুজবে কান দেবেন না।

এসপি বলেন, যারা আপনাদের সাথে ভালো ব্যবহার করবেন তাদের সাথেই থাকবেন। নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক ও তাদের নেতৃবৃন্দরা অত্যন্ত ভালো। আমি দ্ব্যর্থহীনকন্ঠে বলতে চাই, আপনাদের সকল ভালকাজে আমি আছি। আপনারা যখনই ডাকবেন আমি চলে আসবো।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, শ্রমিকদের প্রয়োজন বর্তমান সরকার উপলদ্ধি করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব নেত্রী। বাংলাদেশে অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। তিনি শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের তাগাদা দিচ্ছেন। শ্রমিক-মালিকদের স্বার্থ বিবেচনা করেন বিধায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে, আপনাদের ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের ধৈর্য্যধারণ করতে হবে।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার বলেন, দেশকে পিছিয়ে নিতে অনেক ষড়যন্ত্রকারীরা উঠে পড়ে লেগেছে। বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বিধায় অনেকে ষড়যন্ত্র করছে। যেকোন সমস্যায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারো গুজবে আপনারা কানে দিবেন না। আপনাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আমরাও আপনাদের সাথে আছি। সরকারের বিভিন্ন স্তরে আপনাদের জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে অনেক লোকজন রাখা রয়েছে। মালিকপক্ষও আপনাদের সমস্যাগুলো বুঝবেন। যে গার্মেন্টেসে কিংবা প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করেন সেই প্রতিষ্ঠানটি কিন্তু আপনারও। সুতরাং সকলে মিলে আমরা একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করবো। কোন শ্রমিক না খেয়ে মারা যাবে না- এমন বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন আমরা দেখি। সেই লক্ষ্যেই আমরা সকলে কাজ করি।

তিনি বলেন, কারা দিনের বেলায় ঘুমায়, রাতে সজাগ থাকে তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, মসজিদ-মন্দিরে প্রার্থনা করতে গেলে আশেপাশের ব্যক্তিদের সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে। সবাই সজাগ থাকলে আমরা যেমন মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবো, তেমনি যারা সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকভাইদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা মাদকমুক্ত, জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ গড়তে পারবো।

ঢাকা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচলিক ও রেজিষ্টার অব ট্রেড ইউনিয়ন মো. খোরশেদুল হক ভূঞার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সেলিম রেজা, ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ১ম ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হাতেম, চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিকেএমইএ এর পরিচালক মো. মোরশেদ সারোয়ার প্রমুখ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top