আজ ময়মনসিংহে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে

আজ ময়মনসিংহে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে।  সেই সাথে রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বরিশাল, পটুয়াখালী, সিলেট ও ফরিদপুর অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তা দেশের অন্যত্র প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে অবস্থারত নিম্ন চাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ফণি’। এটা কক্সবাজার থেকে তখনো ১৮৫৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ উপকূল থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘনীভূত হয়ে ভারতের অন্ধ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

কানাডা থেকে ইউনিভার্সিটি সাসকেটচিউয়ানের পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, দূরবর্তী স্থানে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আগামী দুই দিনের মধ্যে দুর্বল না হলে এটা প্রচণ্ড শক্তিশালী হয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। এ সময়ের মধ্যে যদি তা দুর্বল না হয় তবে এটি আগামী ৪ থেকে ৫ মে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন গভীর সাগরে সৃষ্ট এই ঝড়টি সম্বন্ধে ইউরোপিয়ান আবহাওয়া সেন্টার, কানাডিয়ান আবহাওয়া সেন্টার, আমেরিকান আবহাওয়া সেন্টার মডেল পূর্বাভাস দিয়েছে। ইউরোপিয়ান আবহাওয়া কেন্দ্র তাদের পূর্বাভাস মডেলে আগামী ৫ মে রাত ১০টার পর ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও কক্সাবাজার উপকূল অতিক্রম করবে ১৩০ কিলোমিটার বেগে। কানাডিয়ান পূর্বাভাস মডেলে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ৫ মে রাত ১০টার পর সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আমেরিকান আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ৫ মে সন্ধ্যা ৬টার পর সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আমেরিকান ও কানাডিয়ান মডেল পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামী ৫ দিনে ঘূর্ণিঝড়টি মধ্য ও পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং ২ মে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে উত্তর-পূর্ব দিকে চট্টগ্রাম ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস তাদের ৪ নম্বর বুলেটিনে জানিয়েছে, নিম্ন চাপটি গতকাল শনিবার বেলা ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের অন্ধ্র উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের অদূরে সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনা ও যশোরে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ ছিল গোপালগঞ্জে ২২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top