ভারতের ছয় রাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা : হাই অ্যালার্ট জারি

২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় একই দিনে আট জায়গায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছিল সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ। এবার ভারতও আশঙ্কা করছে, সে দেশেও অনুরূপ হামলা হতে পারে। অন্তত ছয়টি রাজ্যে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করছে দেশটির কেন্দ্রীয় প্রশাসন।

ইতোমধ্যে ১৯ জন সন্ত্রাসীর উপস্থিতির রিপোর্ট দিয়েছে কর্নাটক পুলিশ। সন্ত্রাসী হামলার সতর্কবার্তা পেয়ে ছয় রাজ্যের ডিজিকে চিঠি দিয়েছেন কর্ণাটকের ডিজি-আইজিপি নীলমনি এন রাজু। শুক্রবারই ওই চিঠি লিখেন তিনি। অ্যালার্ট জারি হয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও। মূলত দেশের দক্ষিণেই হামলা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তার চিঠি অনুযায়ী, তার কাছে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন এসেছিল। সেই ফোনেই দেশের ছয় রাজ্যে হামলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। হিট লিস্টে রয়েছে তামিলনাড়ু, কর্নাটক, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, পুদুচেরী, গোয়া ও মহারাষ্ট্র।

বিশেষত ট্রেনে হামলা হতে পারে বলে ওই ফোনে সতর্ক করা হয়েছে। কর্নাটক পুলিশ জানায়, তামিলনাড়ুর রামনাথপুরমে অন্তত ১৯ সন্ত্রাসী লুকিয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজ্যটির পুলিশ সতর্ক করে বলেছেন, কোনো ঘটনা ঘটার আগেই যেন যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।

গত সপ্তাহেই ইস্টারের সকালে পরপর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। অন্তত ৩৫৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এরপরই ভারতের দক্ষিণে হামলার আশঙ্কা বেড়েছে।

এদিকে গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানাচ্ছে, কর্ণাটকের একাধিক শহর সন্ত্রাসীদের হামলার নিশানায় আছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা এজেন্সির এমন সতকবার্তাকে মোটেই হালকাভাবে নিচ্ছে না রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের আইটি হাব বলে পরিচিত বেঙ্গালুরুতে তাই জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট । পাশাপাশি মহীশূরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার টি সুনেল কুমার জানিয়েছেন, শহরের সব শপিং মল, ধর্মীয় স্থান, এয়ারপোর্ট, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও অন্যান্য পাবলিক প্লেসে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কা বিস্ফোরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে শহরের বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্টের মালিকদেরও তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার জানান, এ হোটেল, পাব ও রেস্টুরেন্টগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। ফায়ার অ্যালার্ম ঠিক মতো কাজ করছে কি না সেগুলি যাচাই করতে বলা হয়েছে। হোটেলে আসা গাড়িগুলোকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে যেন চেকিং করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি অবশ্য স্বীকার করে নেন, এত বড় শহরে সব জায়গায় নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়৷ তাই নাগরিক হিসাবে অন্যদের কর্তব্য নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকেও নজর রাখা।

উল্লেখ্য, বেঙ্গালুরুতে সারা বছর জেনারেল অ্যালার্ট জারি থাকে। এখানে ৫০০টি গ্লোবাল আইটি ফার্ম, অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি, ইসরো, ডিফেন্স ল্যাব ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকায় এ ব্যবস্থা সারা বছরই বলবৎ থাকে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top