খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় বিএনপির বিক্ষোভ

দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মিছিলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, দফতর সম্পাদক এ বি এম রাজ্জাক, কাফরুল থানা বিএনপি সভাপতি আক্তার হোসেন জিল্লু, বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দিলু, আ: আউয়াল, এনায়েত হাফিজ, ইঞ্জিনিয়ার মজিবুল হক, হারুন অর রশীদ খোকা, ছাত্রনেতা মাসুদসহ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

মিছিল শেষে পথসভায় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ও আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখার উদ্দেশ্যই ছিল মধ্যরাতে নির্বাচন করা। এই নির্বাচন ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করা। তাই জবাবদিহিতাহীন সরকারের দুঃশাসনে সাম্প্রতিককালে এক ভয়াবহ নারী নির্যাতনের শিকার নুসরাত জাহান রাফিসহ দেশব্যাপী নারী হত্যা, নারী নির্যাতনের হিড়িক পড়েছে। অনাচার-অবিচার চরম মাত্রায় উপনীত হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র-সমাজে নৈরাজ্যের ব্যাপক বিস্তারে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। ক্ষমতাসীন দলের লোক হলে তার সাতখুন মাফ, আর বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা যারা ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তাদের মায়ের কোল খালি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাদের ঠিকানা নির্ধারণ করা হয়েছে একমাত্র কারাগারে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাসীন মহলের পছন্দের লোকেরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়ে মানুষের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তাকে অনিশ্চিত করেছে।

রিজভী বলেন, ওয়াসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে দূষিত পানি পান করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এতে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ঢাকাবাসী। চারিদিকে শুধু জন্ডিস, কালাজ্বর, ডেঙ্গুজ্বর, টাইফয়েড, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর ভেসে আসছে। এই সরকারের আমলে মানুষের বেঁচে থাকাটা সবচেয়ে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এই প্রচণ্ড খরতাপে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এখন সারাদিনে দু’এক ঘন্টার বেশি গ্যাস থাকে না। গ্যাসের এই তীব্র সংকটে কল-কারাখানা, বিদ্যুৎ ও গৃহস্থালীর কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। সুষ্ঠু ভোট, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি শেখ হাসিনা কবরে পাঠিয়েছেন বলেই সমাজে অনাচার, সন্ত্রাস ও রক্তপাতের এখন বাড়বাড়ন্ত।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি আরো বলেন, এদেশের কোটি কোটি জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা যাবে না। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। একদলীয় নিষ্ঠুর শাসনের কষাঘাত থেকে দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করতে জনগণ এখন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

মিছিলে নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

একই দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মহানগর বৃহত্তর উত্তরা থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিমানবন্দরের সামনে থেকে শুরু হয়ে জসিম উদ্দিন রোডে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top