গণফোরামের ‘বিশেষ কাউন্সিল’ শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে এমপি হিসেবে শপথ নেয়া মোকাব্বির খান।
আজ শুক্রবার সকাল পৌণে ১১টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে এই জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি অনুষ্ঠানের সভাপতিও। ড. কামালের সাথে একই গাড়ি বহরে করে মোকাব্বির খান সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন।
সিলেট-২ আসন থেকে জয় পাওয়া গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গত ২ এপ্রিল এমপি হিসেবে শপথ নেন। এর পর তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত ৫ এপ্রিল তিনি দলীয় প্রধান ড. কামাল হোসেনের সাথে দেখা করতে গেলে ক্ষুব্ধ কামাল হোসেন তাকে সেখান থেকে বের করে দেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসে পরের বছর গঠন করেন গণফোরাম। ১৯৯২ সালের ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ থেকে বাদ পড়েন ড. কামাল হোসেন।
১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক ফোরামের নামে তিন দিনব্যাপী জাতীয় মহাসম্মেলন আহ্বান করা হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৯ আগস্ট রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময়ে সিপিবির একটি সংস্কারবাদী অংশ, পংকজ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ন্যাপ এবং শাহজাহান সিরাজের নেতৃত্বে জাসদের একটি অংশ গণফোরামের সাথে একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।
ড. হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামে যোগ দেন সিপিবি নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক, ন্যাপ নেতা পংকজ ভট্টাচার্য, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শাহজাহান সিরাজ দলের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এর পরে কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদটি পান সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক। তার মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইঞ্জিনিয়ার কাসেম ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। ২০১১’র ২৯ আগস্ট মোস্তফা মহসিন মন্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এ দিকে এবারো বিশেষ কাউন্সিলে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকটি পদে নতুন মুখ আসছে। এ ছাড়া সুশীলসমাজের একটি প্রতিনিধিদল সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া সুলতান মনসুর গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।
ওই সময় মোকাব্বির খানও শপথ নেবেন বলে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি সরে যান। তিনি পরবর্তীতে নিজ সিদ্ধান্তেই শপথ নেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় সুলতান মসসুরকে গণফোরাম থেকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়।