ইরান থেকে আর আমদানি নয়, তেলের দাম বাড়ছে হু হু করে

মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হচ্ছে সময়সীমা। তার পর আর ইরান থেকে তেল আমদানি করা যাবে না। ওয়াশিংটনের এমন নির্দেশিকার পর পরই দুনিয়াজুড়ে তৈরি হয়েছে জ্বালানি-অস্থিরতা । আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। বৃহস্পতিবারই খবর মিলেছে, ব্রেন্ট তেলের দর একলাফে ব্যারেল পিছু বেড়েছে প্রায় ৭৫ মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ছ’মাসের আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানির মূল্য সর্বোচ্চ অঙ্কের ঘর ছুঁল। জ্বালানির এই দর আরো বাড়তে বলেও আশঙ্কা তাদের।

যুক্তরাষ্ট্র অভিযো করছে, পরমাণু গবেষণা নিয়ে শর্ত মানেনি ইরান। তাই নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে তেল উৎপাদনকারী প্রথম সারির এই দেশ। তবে গত বছর নভেম্বর সেই নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা ঢিলে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইরান থেকে তেল আমদানির জন্য ভারত সহ আটটি দেশকে ছ’মাসের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিল ওয়াশিংটন। তারই মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। অর্থাৎ মে মাসের প্রায় শুরু থেকেই ইরান থেকে তেল আমদানি করা যাবে না। আমেরিকার সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছে রাশিয়া। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-বাণিজ্যে ওপেক (অর্গানাইজেশন অব পেট্রলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে মস্কো।

পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দরে বড় ধরনের হেরফের হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয় ভেনেজুয়েলা এবং লিবিয়া। চলতি বছরে এই দু’দেশে চরম অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও তেলের দাম মোটামুটি একটা জায়গায় থিতু ছিল। কিন্তু ইরানকে ‘শাস্তি’ দিতে গিয়ে তেল আমদানির মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে পড়ে গিয়েছে ভারতসহ আটটি দেশ।

গতকালই তেল উৎপাদনে বিশ্ববাজারে ‘কিং পিন’ বলে পরিচিত সৌদি আরবের শক্তিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালি বলেছেন, এমনিতেই ভেনেজুয়েলার অস্থিরতা তেলের বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল। তার উপর এলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। এই দু’য়ের সাঁড়াশি চাপে খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে চলেছে তেলের আন্তর্জাতিক বাজার। পাশাপাশি, তেল উৎপাদন বাড়াতে সৌদি আরবের এখনই কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন খালিদ।

কী বলছে ইরান? আমেরিকার সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের এটা ‘হঠকারি’ সিদ্ধান্ত। সেইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকা চাইছে ইরান অন্য কোনও দেশে তেল বিক্রি না করুক। কিন্তু সেই বাধা মানবে না ইরান। আয়েতুল্লার কথায়, আমাদের প্রয়োজন মতো জ্বালানি উত্তোলন করব এবং তা রফতানিও করব।

সূত্র : এএফপি

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top