মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোন ধরণের চাকরির আবেদনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত রোববার (২১ এপ্রিল) রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাঞ্ছিত ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আজীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহ-সভাপতি ইমরান মিয়া ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাবির ইকবাল। এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কৃত দুই ছাত্রী হলেন- ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আদ্রিতা পান্না ও ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ঈশিতা বিশ্বাস তিশা। এছাড়া যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাতকে ভবিষ্যতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব তালুকদার, ইমরান মিয়া ও জাবির ইকবাল ইতোমধ্যে মাস্টার্স শেষ করায় তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা সম্ভব নয়। তাই তাদেরকে ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো চাকরির আবেদনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর দুই ছাত্রীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। একজনকে তিরস্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ঈশিতা বিশ্বাস তিশা পূর্ববর্তী সেমিস্টারে পাস না করলেও গত বছরের ৭ অক্টোবর তাকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য সিটে বসিয়ে দেয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার ও তার সহযোগীরা। তখন ওই বিভাগের শিক্ষকরা এই কাজে বাধা দিতে গেলে তারা লাঞ্ছনার শিকার হন।
এ ঘটনায় দোষীদের বহিষ্কার না করায় পরদিন ৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪ জন শিক্ষক প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ওই ছাত্রী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভার মাধ্যমে পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।