শ্রীলংকায় হামলার খবর অগ্রীম জানতো ভারত! ভয়াবহ হামলার শিকার হওয়ার দুই ঘণ্টা আগেই শ্রীলংকার গোয়েন্দা সংস্থাকে সতর্ক করেছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
শ্রীলংকার নিরাপত্তা বাহিনী ও ভারত সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়েছে।
রোববার ইস্টার সানডের সকালে দেশটির রাজধানী কলম্বোসহ আশেপাশের এলাকায় প্রথমে তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে এবং দুপুরে পৃথক দুই জায়গায় ওই হামলা হয়।
হামলায় ৩২১ জন নিহত ও ৫০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এরই মধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন (আইএস)।
রয়টার্স জানায়, গির্জায় হামলার দুই ঘণ্টা আগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা শ্রীলংকার গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হামলার বিয়ষে এ সময় তাদের সতর্ক করেন তারা।
শ্রীলংকার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র এতথ্য নিশ্চিত করেছে বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদেন বলা হয়। দেশটির নিরপত্তা বাহিনীর আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম হামলার ঘণ্টাখানেক আগে একটি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল শ্রীলংকার গোয়েন্দা সংস্থাকে।
কোনও কর্মকর্তা নাম না উল্লেখ করে রয়টার্স বলছে, শ্রীলংকার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে- হামলার আগের রাতে অর্থাৎ শনিবার রাতে ওই হামলা সম্পর্কে শ্রীলংকাকে সতর্ক করেছিল ভারত।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্র্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার দিন শ্রীলংকাকে যে ধরনের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল; প্রায় একই ধরনের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল ৪ এবং ২০ এপ্রিলও।
বিবিসি জানায়, ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা রোববার সকালে প্রার্থনা করার সময় কলম্বোসহ দেশটির তিনটি গির্জায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময় কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেল– শাংরি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবুরিতেও বোমার বিস্ফোরণ হয়।
সকালে ছয়টি স্থাপনায় হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে কলম্বোর দক্ষিণাঞ্চলের দেহিওয়ালা এলাকায় একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এরপর কলম্বোর উত্তরে ওরুগোদাওয়াত্তা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। এসব হামলায় নিহত হন ৩২১ জন।
ওইসব হামলার ঘটনায় সোমবার বিকেলে জামায়াত আল-তাওহীদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস। এর একদিনের মাথায় একই হামলায় দায় স্বীকার করে আইএসও।
হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
শ্রীলংকার কলম্বোতে হামলায় নিহত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরী। এসময় আহত জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।