২০১৮ সালের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিসোর্ট-এর র্যাঙ্ক অনুযায়ী ডেনমার্ক বিশ্বের প্রথম তিনটি ‘আনন্দিত দেশের’ মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। এ নিয়ে সপ্তম বার ডেনমার্ক এই খ্যাতিলাভ করল। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এই দেশটি এত আনন্দ কেন থাকে? উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই এ বিষয়ে একমত যে দেশটির ‘হাইজি’ সাংস্কৃতিক নির্মাণের জন্য। ‘হাইজি’ শব্দটিকে স্থানীয়ভাবে তারা উচ্চারণ করেন ‘হো-গা’ বলে। এই শব্দটি ২০১৭ সালে অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে স্থান পেয়েছে। ‘হাইজি’ শব্দের অর্থ হিসেবে সেখানে লেখা হয়েছে আরামদায়ক বা ‘কোজি’ শব্দটি। এই ‘কোজি’ শব্দটি বোঝায় যে ওই এলাকার পরিবেশ যথেষ্ট আরামদায়ক এবং নৈকট্যপূর্ণ।
ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে একটি সন্ধ্যে যাপন করাও হাইজি, অথবা একটি রৌদ্রজ্জ্বল ঝলমলে দিনে পিকনিক করাও এক অর্থে ‘হাইজি’। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে এক কাপ কফি নিয়ে আড্ডাও ‘হাইজি’ এমনকি শীতের দিনে ফায়ার প্লেসের সামনে উষ্ণতা খুঁজে বেরানোও কিন্তু আদতে ‘হাইজি’ই। দ্য কনভারসেশন-এর মতে হাইজি নিয়ে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে যে ডেনমার্কের মানুষজনের ভালো থাকার ক্ষেত্রে হাইজি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তবে ভালো থাকার, দুশ্চিন্তা মুক্তির এবং মানুষকে খুশি করার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে হাইজি-র ভূমিকা প্রবল হলেও এটাই একমাত্র কারণ নয় যা ডেনমার্ককে বিশ্বের আনন্দিততম দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
ডেনমার্কের মানুষজনের মধ্যে দুশ্চিন্তা নেই তার একটা বড় কারণ তাদের সরকার। ডেনমার্কের নাগরিক জনগণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকার বিনামূল্যে পান। তাদের পেনশন ব্যবস্থা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে ভালো বলে বিবেচিত হয়। দেশের সকলে মিলে বিশ্বের সব থেকে বেশি পরিমাণ আয়কর প্রদান করেন। দেশের মানুষ এই সব কিছু মিলিয়েই ভালো থাকে। কারণ তাদের মনে হয় এ ভাবে তারা একটা ভালো সমাজ গড়ে তুলতে পারছেন।
আর তাই নাগরিকদের মনে দুশ্চিন্তাও প্রায় থাকে না বললেই চলে এবং তারা আনন্দেই দিন কাটাতে পারেন।