শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিহত শিশু জায়ান চৌধুরীর লাশ মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি আট বছরের জায়ান চৌধুরী পরিবারের সাথে বেড়াতে গিয়ে শ্রীলঙ্কায় রোববারের বোমা হামলায় নিহত হয়েছে।
ওই ঘটনায় শিশুটির বাবা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্সও আহত হন বলে গণমাধ্যমকে জানান শিল্পমন্ত্রী।
শেখ সেলিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই।
সোমবার শেখ সেলিমের বাসায় গিয়ে তাকে সান্ত্বনা জানানোর পর শিল্পমন্ত্রী মি. হুমায়ূন জানান, জায়ান চৌধুরীর লাশ মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। তবে জামাতা মশিউল হক চৌধুরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এখনই তাকে দেশে আনা সম্ভব হচ্ছে না এবং তাকে হয়তো আরো কয়েকদিন সেখানে থাকতে হবে।
তবে শিশুটির মৃত্যুর খবর এখনো তার বাবা-মাকে জানানো হয়নি বলে মন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন।
মি. হুমায়ূন বলেন, প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল যে শিশুটি হয়তো নিখোঁজ রয়েছে, তবে পরে পরিবারের সদস্যরা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে তার লাশ সনাক্ত করেন।
শেখ সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া তার স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তারা একটি হোটেলে ছিলেন।
সকালে বোমা হামলার কিছু আগে বড় ছেলে জায়ানকে নিয়ে মশিউল হক চৌধুরী সকালের নাস্তা করার জন্য নিচের রেস্তোরাঁয় যান। ছোট ছেলে জোহানকে নিয়ে শেখ সোনিয়া তখনো হোটেলে নিজেদের কক্ষে অবস্থান করছিলেন।
ওই সময় বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
জায়ান চৌধুরী ঢাকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করতো বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বাসস জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনেই সফরের সময় রোববার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের পরিবার শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সেলিমের মেয়ে-জামাই ও নাতি এ সময় একটি রেস্টুরেন্টে খাচ্ছিলেন। সেখান একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে মেয়ে-জামাই আহত হন এবং (গতকাল) বিকেল পর্যন্ত নাতির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’
শ্রীলঙ্কায় হামলার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম একটি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, বোমা হামলার ঘটনার পর থেকে এক শিশুসহ দুই বাংলাদেশির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি কারো পরিচয় জানাননি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমরা জেনেছি একটি পরিবারের চারজনের মধ্যে দুজন ‘রিপোর্টেড’ (খোঁজ পাওয়া গেছে)। বাকি দুজনের একজন শিশু ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিখোঁজ। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনো কিছুই জানা যায়নি। আমরা আশা করছি তাদের কোনো হোটেল বা হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আমরা জানতে পারলেই জানিয়ে দেয়া হবে।”
রোববার ইস্টার সানডের অনুষ্ঠানমালা চলার সময় শ্রীলঙ্কার অন্তত ছয়টি স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।