চমক নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। গেল কয়েক বছরে মেয়েদের ফুটবল মানেই যেন হয়ে গিয়েছিল চমক জাগানিয়া সব খবর। প্রতিপক্ষকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবলের বিপ্লব নজর কাড়ছিল আলাদাভাবে। তবে গেল সাফ ফুটবলে সে সাফল্যে লেগেছে ধাক্কা। এবার ঘরের মাঠে আরেকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট জিতে ফের জাগরণের গল্প শুনাতে প্রস্তুত বাংলাদেশের মেয়েরা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট। স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও লাওস।
টুর্নামেন্টের প্রথম দিন সন্ধ্যা ছয়টায় স্বাগতিক বাংলাদেশ লড়বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। টুর্নামেন্টের দুদিন আগে আশার গল্প শুনিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, অধিনায়ক মিসরাত জাহান মৌসুমি আর সহ অধিনায়ক মারিয়া মান্দা।
গত মার্চে সাফ ফুটবলে ভারতের কাছে ৪ গোল খেয়েছিল বাংলাদেশ। সাবিনা খাতুন ছাড়া এবার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে আছেন সে দলেরই বাকি সবাই। অর্থাৎ বয়সভিত্তিক হলেও এটিকে বলা চলে প্রায় জাতীয় দলই। স্বাভাবিক কারণেই সাফ ফুটবলের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ এসেছে। সেই ব্যর্থতা থেকেই এবার কৌশলেও বদল আনছেন কোচ ছোটন। জানালেন সাফে রক্ষণাত্মক খেললেও এবার আগ্রাসী মেজাজে নামছেন তারা। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে তাই দেখা যাবে ৪-৩-৩ ছকে।
অবশ্য এমনিতেই এই টুর্নামেন্ট থেকে বড় কিছু আশা করতেই পারে বাংলাদেশ। একমাত্র আরব আমিরাত ছাড়া বাকি সবাই র্যাঙ্কিংয়ে আছে বাংলাদেশের পেছনে। এগিয়ে থাকা সেই আরব আমিরাতের সঙ্গেও সাম্প্রতিক সময়ে ফল কথা বলছে বাংলাদেশের হয়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে আরব আমিরাতকে ৭-০ গোলে ভাসিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা।
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন তাই সাহস নিয়েই বলতে পারলেন, ‘নেপালের টুর্নামেন্টের পর খেলোয়াড়দের যে শারীরিক ও মানসিক রিকভারি প্রয়োজন ছিল, তা হয়েছে। মাঠের খেলায় যে ভুলত্রুটি গুলো করেছিল খেলোয়াড়েরা, সে সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করা হয়েছে। খেলোয়াড়েরা এখন টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে ফাইনালে খেলতে চাই। প্রথমত গ্রুপের দুটি ম্যাচ জিততে চাই। এরপর সেমিফাইনালে জিতে খেলতে চাই ফাইনাল। টুর্নামেন্টকে স্মরণীয় করে রাখতে দেশেই ট্রফি রেখে দিতে চাই আমরা।’
কোচ শিরোপার কথা বলছেন, তবে অধিনায়ক মিসরাত জাহান দেশের মাঠে এত বড় টুর্নামেন্টের ঝাঁজ টের পেয়েও আপাতত স্বপ্ন দেখছেন ফাইনালের, ‘প্রথমবারের মতো দেশে বড় একটি টুর্নামেন্ট। শেষ নেপালের সাফ ও মিয়ানমারের অলিম্পিক বাছাইপর্ব থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, ঢাকার টুর্নামেন্টে তা কাজে লাগাতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল খেলা।’
দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে শুরু এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল ৩ মে। এ-গ্রুপে আছে মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তান ও লাওস। বি-গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী আরব আমিরাত ও কিরগিজস্তান।