এখনো পাকিস্তানকে কাঁদানোর অপেক্ষায় নরেন্দ্র মোদি!

ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। সাত দফা ভোট গ্রহণের আজ দ্বিতীয় দফায় সেখানে ভোট গ্রহণ চলছে। সে নির্বাচনে স্বাভাবিকভাবেই সব দলই নিজেদের দেশপ্রেমিক বলে প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী, সাম্যবাদী কোনো দল এর বাইরে নেই। ক্ষমতাসীন বিজেপি তো আরো এক ধাপ এগিয়ে।

কিন্তু যখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, বিজেপিই আবার ক্ষমতায় আসলে ভালো। তখনই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইমরান খান অবশ্য বলেছেন, বিজেপি জিতলে মূলত ভারত-পাকিস্তান শান্তি আলোচনার পথ প্রশস্ত হবে। কিন্তু মোদি সে দিকে না গিয়ে উল্টো বলেছেন, এখন পাকিস্তানের কাঁদার পালা, শহিদদের বদলা কি আমরা নেব না?

গতকাল বুধবার বিকেলে গুজরাটে সুরেন্দ্রনগরে এ নির্বাচনী সভায় উপরের কথাগুলোর পাশাপাশি আরো বলেন, আগে পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসীরা এসে হামলা চালিয়ে ফিরে যেত। ভারতের প্রত্যাঘাতের প্রশ্ন উঠলেই ওরা বলত, আমাদের কাছে পরমাণু বোমা আছে। আমি সিদ্ধান্ত নিই, যা হয় হোক বদলা আমরা নেবই। ওদের ব্ল্যাকমেলের ফাঁদে আর পা দেব না। আমাদের কাছে পরমাণু বোমার মা আছে।

কংগ্রেসের শাসনামলের সমালোচনা করে মোদি বলেন, আগে কিছু হলে আমাদের লোকেরা গোটা দুনিয়ায় কেঁদে ফিরত, পাকিস্তান এই করেছে, পাকিস্তান ওই করেছে। এখন পাকিস্তানের কাঁদার পালা। আমরা কি ওদের ঘরে ঢুকে মারিনি? আমরা কি ওদের ঘরে ঢুকে মারব না? আমরা কি আমাদের জওয়ানদের শহিদ হওয়ার বদলা নেব না?

ইমরানের মন্তব্য নিয়ে ওই জনসভায় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন উল্টো কংগ্রেসকে আক্রমন করে বসেন। তিনি বলেন, আমি জানি না, কেন এই মন্তব্য করা হল। মাঝেমধ্যেই এই সব বলা হয়। তবে আমি এ-ও জানি, কংগ্রেসের অনেক বড় বড় নেতা পাকিস্তানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হটানোর জন্য সে দেশের নেতাদের সমর্থন চেয়েছিলেন। এখন মনে হচ্ছে, এ সবই কংগ্রেস নেতৃত্বের একটি অংশের খেলা। এটা আমার দল বা সরকারের বক্তব্য নয়। শুধুই আমার ব্যক্তিগত মতামত।

আর এক সাক্ষাতকারে ইমরানের মন্তব্যের ব্যাপারে মোদী বলেছেন, মনে রাখতে হবে, ইমরান ছিলেন ক্রিকেটার। ভারতীয় নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে সম্ভবত ওটা তার ‘রিভার্স সুইং’। তবে ‘রিভার্স সুইং’ এলে কী ভাবে ‘হেলিকপ্টার শট’ হাঁকাতে হয়, ভারতীয়রা সেটা জানে।

ভারত-পাকিস্তান প্রতিবেশী দুটি দেশ হলেও তাদের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ বা বন্ধুত্বসুলভ আচরণ কখনোই দেখা যায়নি। বরং মাঝে মধ্যেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে আরো বেশি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় যুদ্ধপরিস্থিতির। এ পর্যন্ত কয়েকটি যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়েছে দেশ দুটি। তারপর হয়তো আবার থেমে গেছে, কিন্তু সম্পর্কের উন্নয়ন সে অর্থে কখনো হয়নি।

সম্প্রতি ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী হামলার জেরে দুই দেশের সম্পর্ক আবারো খারাপ হয়ে ওঠে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top