দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়ে কিছু জানে না বিএনপি- এমনটাই দাবি দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছেন বলে কতিপয় মিডিয়া যে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে সে বিষয়ে আমারা বিএনপির কোনো নেতাকর্মী কিছু জানি না। এসব মিডিয়া কোন সূত্রে এরকম মিথ্যাচার করছে তাও আমাদের অজানা।’
আজ বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশনেত্রীর প্যারোল নিয়ে যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে তার সাথে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জড়িত।’
বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া চরম অসুস্থ, তার ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, তিনি তার পছন্দমত একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চাচ্ছেন। এ বিষয়ে তো কোনো প্রতিবেদন করা হয় না, তাহলে তার প্যারোল নিয়ে নোংরা মিথ্যাচার কেন?’
রিজভী বলেন, ‘আদালতের উপর সরকারের নোংরা হস্তক্ষেপের কারণে খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না।’ বেগম জিয়াকে সরকারের ইচ্ছায় আটক রাখা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আদালতের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ হলে বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাবেন।’
দেশ পরিচালনায় সরকার ব্যর্থ উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দেশ খুন, গুম ও হত্যার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধা, এমনকি প্রতিবন্ধীরাও ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। পাশবিকতা চালানোর পর তাদের বাঁচতেও দেয়া হচ্ছে না। এসব ধর্ষণ ও হত্যার সাথে শতকরা ৯৫ ভাগ সরকার দলীয় লোক জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ফেনীর সোনাগাজীর স্থানীয় এমপি নুসরাতের পরিবারকে ওলামা লীগ নেতা সিরাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন আর প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের পরিবারকে ডেকে এনে তার ভাইয়ের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছেন। এই নিয়োগপত্র নুসরাতের পরিবারের মুখ বন্ধ করার জন্য বলে জনগণের কাছে মনে হচ্ছে।
পুলিশ প্রশাসনের উপর সরকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ভয় পায়। কারণ পুলিশের দ্বারাই সরকার টিকে আছেন।
তিনি বলেন, ফেনীর সোনাগাজীর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে লাঞ্ছিত করেছেন এবং তার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান প্রমুখ।