যেসব অভ্যাসে কমে যায় বুদ্ধি

শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিষয়ে আমরা কম-বেশি সচেতন বা সতর্ক হলেও মস্তিষ্কের সুরক্ষা বা সুস্থতার বিষয়ে আমরা প্রায় সকলেই উদাসীন! মস্তিষ্কের সুরক্ষা বা সুস্থতার বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতা বা উদাসীনতার কারণে ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় আমাদের বুদ্ধিমত্তা।

কিন্তু কার বুদ্ধিমত্তা কতটা, তা জানবেন কী করে?

দূরত্ব মাপার একক ফুট, মিটার, কিলোমিটার। তরল পদার্থ মাপতে হলে তা মাপা হয় লিটারে আর মানুষের বুদ্ধি মাপতে হলে হিসেব নেওয়া হয় তার বুদ্ধ্যঙ্ক (আইকিউ)-এর (IQ বা Intelligence Quotient) ভিত্তিতে। এ কথা অবশ্য আমরা অনেকেই জানি। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ ‘আইকিউ ওয়ার্ল্ড টেস্ট’-এ ১৩০-র (যা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তির পক্ষেই পাওয়া সম্ভব) উপরে নম্বর পান।

দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, আমাদের অজ্ঞতা বা উদাসীনতার কারণে ধীরে ধীরে বুদ্ধ্যঙ্ক (আইকিউ)-এর মাত্রা ক্রমশ হ্রাস পায়। আর এর জন্য মূলত আমরা নিজেরাই দায়ী। আমরা এমন কিছু কাজ প্রায় প্রতিদিন করি যা আমাদের বুদ্ধিমত্তা কমিয়ে দেয়ার জন্য দায়ী। আসুন জেনে নেয়া যাক, এমন কিছু অভ্যাস সম্পর্কে যেগুলো আমাদের অজান্তেই মস্তিষ্কের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের বুদ্ধিমত্তা…

১) অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস শুধুমাত্র মেদই বাড়ায় না, সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ওপর অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টানা প্রায় ৬ সপ্তাহ চিনি জাতীয় খাবার খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, নতুন কোনো কিছু শেখার ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যায়। দুর্বল হয়ে পড়ে স্মৃতিশক্তি।

২) অনেকেই মনে করেন একসঙ্গে দুই বা তার বেশি কাজ করতে পারা দুর্দান্ত কোনো দক্ষতা। কিন্তু বিষয়টি আসলে উল্টোই! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি-র একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটিই কাজ করেন, তাদের চিন্তা করার ক্ষমতা অনেক বেশি। তুলনায় যারা একসঙ্গে অনেক কাজ করতে যান, চিন্তা করার ক্ষমতা অনেক কম।

৩) মাত্রাতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ আলজেইমার রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে লোপ পেতে থাকে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক মনে রাখার ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা।

৪) স্থূলতার সঙ্গে শুধুমাত্র শারীরিক সমস্যাই জড়িত নয়, এর মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়ে আমাদের মস্তিষ্কের ওপরেও। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাঝ বয়সের পর যারা মোটা হয়ে যান, তাদের চিন্তা করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৫) অনেকেই ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে বুদ্ধ্যঙ্ক হারাতে থাকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্ট্রাল মিশিগান ইউনিভার্সিটি’-র একটি গবেষণায় জানা গেছে, যে সকল শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার, তাদের আইকিউ অন্যান্য শিশুর তুলনায় অনেকটাই কম।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top