মো. আব্দুল কাইয়ুম: ইসলামের খেদমতে বাংলাদেশ সৃষ্টির লগ্ন থেকেই প্রাণ পুরুষদের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষা দুই ধারায় পরিচালিত। এর একটি আলিয়া মাদ্রাসাকেন্দ্রিক, অন্যটি কওমি মাদ্রাসা। আলিয়া মাদ্রাসা শুরু থেকেই সরকার নিয়ন্ত্রিত। আর কওমি মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রিত হয় হক্কানি ওলামায়ে কেরামদের দ্বারা। আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা নানা মতের দ্বারা প্রভাবিত। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ইসলামের দাওয়াত ও শিক্ষা পৌছে দিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে লাখো কোটি মসজিদ মাদ্রাসা। আর এসব মসজিদ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দিনের পর দিন ত্যাগ স্বীকার ও বাঁধা অতিক্রম করে দেশে ইসলামী পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছেন মুসলিম জাহানের মুরুব্বিরা। বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলো হক্কানি ওলামায়ে কেরামদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের আশা লক্ষণীয়। যেসব মহান পুরুষ ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম আল্লামা আশরাফ আলীর থানভী (রহ.) এর স্নেহধন্য প্রিয় শাগরেদ আল্লামা মানযুরুল হক (রহ.)। তিনি ময়মনসিংহের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিষ্ঠা করেছেন অসংখ্য মাদ্রাসা ও মসজিদ। ১৯৪২ সালে তিনিই ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র চরপাড়া মোড়ে ডাক্তার নেওয়াজ আলী সাহেবের দেওয়া প্রায় ৮০ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন দারুল উলুম নামের দ্বীনি কওমি মাদরাসা। এটি পরবর্তীতে ১৯৫৬সালে জামিয়া ইসলামিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে। যা আজো সগৌরবে ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
মাদ্রাসার বর্তমান মুহতামিম (অধ্যক্ষ) হলেন মাওলানা শওকত আলী। শিক্ষাসচিব মাওলানা সাঈদ আহমাদ। স্টাফ সংখ্যা ৫০জন। ছাত্র সংখ্যা ৮০০। নূরানি থেকে দাওরা ও ইফতা পর্যন্ত বিভাগ রয়েছে। মাদরাসার ভেতরে রয়েছে বিশাল গ্রন্থাগার। আছে সাহিত্য ও প্রকাশনা বিভাগসহ বক্তৃতা প্রশিক্ষণ, ইসলামি সাংস্কৃতি বিভাগ এবং দাওয়াতি কার্যক্রম৷
প্রতিষ্ঠানটির মূল গেইটের পাশেই প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদীনের মুহতামিম যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা আল্লামা আতহার আলী (রহঃ) এর কবরস্থান।
মুহিউস্সুন্নাহ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বহুগ্রন্থ প্রণেতা মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়াহ, মাওলানা মুহাম্মদ তৈয়ব ও মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদসহ দেশ বিদেশে প্রতিষ্ঠিত বহু ইসলামের আদর্শবান ব্যক্তিএখান থেকে ইলমে দ্বীন হাসিল করেছেন।
মাদ্রাসাটিতে এতিম বিভাগ রয়েছে। যাতে অসংখ্য এতিম বিনে পয়সায় পড়াশুনা করছে। সাধারণ মানুষের আর্থিক সহযোগীতায় চলছে এ প্রতিষ্ঠানটি। তাই দ্বীনের খেদমতে ও এতিম শিশু ও যুবকদের পাশে দাঁড়াতে সকলকেই এগিয়ে আসা উচিত। মুক্ত হস্তে দান করলে এ প্রতিষ্ঠান থেকে বহু আলেম দেশ বিদেশে ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখতে পারবে।