বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে এবার জামায়াত সংশ্লিষ্টতার নতুন অভিযোগ তুলেছে ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগের মাধ্যমে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ করছে বিজেপি।
বাংলাদেশ থেকে উড়ে গিয়ে ভারতে তৃণমূলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর প্রেক্ষিতে জামায়াতের সাথে তৃণমূলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করে এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা।
তিনি বলেন, এটি যদি কোনো বিদেশী ষড়যন্ত্র হয়, তাহলে এটি তদন্ত করে দেখা দরকার। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এতে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত রয়েছে। নইলে অন্য দেশের নাগরিক কীভাবে ভারতের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে? আমরা এ বিষয়টি কেন্দ্রকে জানাবো।
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্যসভা বিধায়ক স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, বিজনেস ভিসায় এসে রাজনৈতিক কর্মকা-ে অংশ নেয়া অবশ্যই ভিসা আইনের লঙ্ঘন।
এখানে সংখ্যালঘুর কোনো বিষয় নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অবশ্য এ অবস্থায় উল্টো বিজেপির দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন কলকাতার মেয়র ও তৃণমূল নেতা ফরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, অকারণেই পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলছে বিজেপি। কে কার হয়ে প্রচার করল, তা নিয়ে কারো কিছু যায় না। আসলে বিজেপির পায়ের তলায় এখন আর মাটি নেই। তাই তারা এত কাণ্ড করছে।
জানা গেছে, ভারতে কাজের অনুমোদনপত্র পেয়েছিলেন ফেরদৌস। কিন্তু রায়গঞ্জে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে দেখা যায় তাকে। ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করায় তাকে দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
ভারতের অভিবাসন দফতর এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতে কাজের জন্য ভিসা দেওয়া হয়েছিল ফেরদৌসকে। কিন্তু সেই শর্ত লঙ্ঘন করেছেন অভিনেতা। তাদের এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফেরদৌসের ওই ভিসা বাতিল করে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই সাথে তাকে অবিলম্বে ভারত ত্যাগের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ফেরদৌসকে।
জানা গেছে, ফেরদৌসের মতো ভারতের রাজনীতিতে নাক গলিয়ে ফেঁসে যেতে পারেন আরেক বাংলাদেশী অভিনেতাও। মদন মিত্রের সঙ্গে সৌগত রায়ের সমর্থনে প্রচারে নেমেছিলেন ‘রাণী রাসমণি’র রাজা রাজ চন্দ্রের অভিনেতা গাজি আবদুন নুর। ফেরদৌসের মতো তারও ভারতে কাজের অনুমোদনপত্র ছিল। সেই হিসেবেই দেয়া হয়েছিল তাদের ভিসা। কিন্তু ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক প্রচারে সামিল হন তারা।
ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে বিজেপি। পরে ফেরদৌসকে ডেকে পাঠায় কলকাতায় ভারতীয় উপদূতাবাস। তাকে দেশে ফিরতে নির্দেশ দেয়া হয়। ইতোমধ্যেই অবশ্য ঢাকায় ফিরেছেন ফেরদৌস।