সৌম্য-লিটন-সাব্বিরকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিসিবি সভাপতি

বাংলাদেশ দলের তিন হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান লিটন দাস, সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। ছন্দে থাকলে ব্যাট হতে ক্রিজে বোলদের জন্য আতঙ্ক হয়েই থাকেন; কিন্তু সম্প্রতি টানা অফ ফর্মে এই তিন ক্রিকেটার। আর তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ক্রিকেট বোর্ডও।

বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করতে আর কয়েকদিন বাকি। এর পূর্বমুহূর্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানালেন দুশ্চিন্তার কথা। মূলত এই তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, খেলোয়াড়দের ফর্মহীনতায় কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে তাদের। একই রকম কথা বলেছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন বিসিবির সভাপতি স্বয়ং।

একটি টিভি চ্যানেলের সাথে আলাপকালে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমাদের দলের প্রধান সমস্যা হলো ধারাবাহিতার অভাব। সৌম্য সরকার ও লিটন দাস একটি ম্যাচ ভালো খেললে ১০ ম্যাচে খবর থাকে না। সাব্বির এক ম্যাচে ভালো করলে চার-পাঁচ ম্যাচে আর তাকে পাওয়া যায় না। এটা আমাদের বড় সমস্যা তা অনয়াসে স্বীকার করছি।’

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিউজিল্যান্ড সফর ছিল টাইগারদের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। কিন্তু সেই সফরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি কোন ফরম্যাটেই ক্রিকেটাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। ওপেনার লিটন দাস নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওডিআইতে ১ রান গড়ে করেন (৩) রান! আরেক টপ অর্ডার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে তিন ম্যাচে ১৭.৩৩ গড়ে করেন (৫২) রান। সেই সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সাব্বির সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেরার আশ্বাস দিলেও সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএলে) ছিলেন একদমই ফ্লপ। ১০ ম্যাচে ২৭.১০ গড়ে করেন ১৯৪ রান। একটি ফিফটি ছাড়া বলার মতো কোন স্কোর নেই।

নিউজিল্যান্ড সফরের পর ঘরোয়া লিগে ফর্মে ফেরার আশায় বুক বেঁধে ছিলেন নির্বাচকমন্ডলী। কিন্তু সেখানোও ধারাবাহিক অফ ফর্মে ছিলেন লিটন, সৌম্য ও সাব্বিররা। ডিপিএলে ৮ ম্যাচে ২২.২৫ গড়ে সৌম্য করেন ১৭৮ রান। নেই কোন শতক কিংবা অর্ধশতক। যারা বাংলাদেশ দলে নিয়মিত টাপঅর্ডার সামলান তাদের ফর্মের এমন দৈন্যদশা বিসিবিকে দুশ্চিন্তায় ফেলাটাই স্বাভাবিক।

দলের এমন অবস্থায়ও সাহসের বাণী নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘তবে আমাদের দলের ভালো দিক হলো, আমাদের খেলোয়ড়রা অনেক সাহসী। তামিম-সাকিব-মুশফিক ও রিয়দরা কাউকে ভয় পায় না। তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন কয়েকেজন ক্রিকেটার। মিরাজ-মোস্তাফিজরাও কাউকে ভয় পায় না। তাছাড়া দেশের মানুষের দোয়াতো তাদের সঙ্গে থাকছেই।’

আইসিসির ঘোষিত নিয়মানুসারে আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী সকল দলের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করত হবে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ দলের দল ঘোষণার কথা রয়েছে।

বিসিবি প্রধান আরো বলেন, আইসিসির নিয়মানুসারে এখনই আমাদের একটি দল দিতে হবে। তবে বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে আমাদের (আয়ারল্যান্ডে, বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ত্রিদেশীয় সিরিজ রয়েছে। সেই সিরিজে ভালো ফর্ম করা দুই-তিনজন আমাদের বিশ্বকাপ দলে চলে আসতে পারে।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ মে থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে যৌথ আয়োজনে বসতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১২তম আসর। আসরে ২ জুন বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top