তেলের বিশাল সম্ভাবনা : দ্রুত বদলে যাবে পাকিস্তান!

পাকিস্তানের স্বপ্নচারী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দেশের মানুষকে শিগগিরই এক সুখবর শোনাবেন বলে জানিয়েছেন। ইমরান খান বলেছেন, ‘আমাদের পানিসীমায় বিশাল তেলের মজুদ পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দ্বারপ্রান্তে। আল্লাহ চাহে তো এই অফশোর রিজার্ভ পাওয়া গেলে পাকিস্তানকে কোনো তেল আমদানি আর করতে হবে না। এই সাফল্যের জন্য আমাদের করুণাময়ের কাছে মুনাজাত করা উচিত।’

ইমরান খানের এ বক্তব্যের পর দেশটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, এপ্রিলের শেষ নাগাদ পাকিস্তান বিশাল তেল ও গ্যাসের রিজার্ভ আবিষ্কারের ঘোষণা দেবে। এক্সন মবিলের নেতৃত্বাধীন চারটি শীর্ষস্থানীয় সংস্থার একটি কনসোর্টিয়াম, করাচির উপকূলের অদূরে ইরান সীমান্তের কাছাকাছি সুগভীর পানিতে যে ড্রিলিং শুরু করেছে, সেখানেই এই সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। কনসোর্টিয়াম উল্লেখ করেছে, তারা করাচি উপকূল থেকে ২৩০ কিলোমিটার দূরে কেকড়া-১ নামে অফশোর সিন্ধু জি-ব্লক বৃহদায়তন তেল ও গ্যাস মজুদের সন্ধান লাভ করেছে।

এখন সমীক্ষা ড্রিলিং প্রক্রিয়া চলছে এবং প্রকল্পের সাফল্য সম্পর্কে খুবই ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে ৪০০০ মিটারের বেশি উল্লম্ব ড্রিলিং সম্পন্ন হয়েছে। ৫৫০০ মিটার লক্ষ্যে যেতে ড্রিলিংটি আনুভূমিকভাবে চলছে। কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ১০০০ মিটার ড্রিলের পর নমুনাগুলোর পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষায় ২০০ জনের বেশি পেশাদারদের অত্যন্ত দক্ষ দল অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, ড্রিলিং স্থানে বিশাল হাইড্রোকার্বনের মজুদ রয়েছে, যা পাকিস্তানের ২৫ থেকে ৩০ বছরের প্রয়োজন পূরণের জন্য যথেষ্ট। এই জ্বালানি মজুদ আবিষ্কারটি ‘সুই ক্ষেত্রের’ মতো বড় হতে পারে। এতে রিজার্ভ তিন থেকে আট ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট (টিসিএফ) হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা দেশের মোট গ্যাস রিজার্ভের ২৫ থেকে ৪০ শতাংশের সমান।

পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানান, দেশটির বিদ্যমান হাইড্রোকার্বন রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে এবং দিনে দিনে আমদানি করা গ্যাস ও তেলের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিদ্যমান মজুদ ২০২৭ সাল নাগাদ ৬০ শতাংশ কমে যাবে। এ বাস্তবতার কারণে সম্ভাব্য জ্বালানি মজুদ এলাকায় অনুসন্ধানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। বর্তমান অফশোর ড্রিলিংটি হচ্ছে ইএনআই, এক্সন মোবিল, অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে। গত ডিসেম্বরে এক্সন মোবিল ঘোষণা করেছিল, প্রায় তিন দশক পর পাকিস্তানি বাজারে তারা নিজেদের পুনর্গঠন করবে।

পাকিস্তানের সামুদ্রিক ও পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী আবদুল্লাহ হুসাইন হারুন বলেছেন, পাকিস্তান-ইরান সীমান্তের কাছে বিশাল তেলের রিজার্ভ আবিষ্কার চূড়ান্ত পর্যায়ে, যা কুয়েতের রিজার্ভের চেয়েও বড় হতে পারে। তেলের মজুদ প্রত্যাশিত হিসাবে আবিষ্কৃত হলে, কুয়েতের ষষ্ঠ অবস্থানে এগিয়ে পাকিস্তান শীর্ষস্থানীয় ১০টি তেল উৎপাদক দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে।

কুয়েতের তেলের রিজার্ভ বৈশ্বিক রিজার্ভের ৮.৪ শতাংশ। বর্তমান অনুমান অনুযায়ী, বিশ্বের উত্তোলনযোগ্য তেলের রিজার্ভের ৮১.৮৯ শতাংশ ওপেক সদস্য দেশগুলোতে রয়েছে। আর ওপেকের সর্বমোট ৬৫.৩৬ শতাংশ মজুদ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে এক্সন মোবিল এ অর্থায়নে ১০ বিলিয়ন ডলারের একটি জেনারেশন কমপ্লেক্স প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা করাচিতে দ্বিতীয় বন্দর, পোর্ট কাসিমে একটি এলএনজি বার্থ স্থাপন করবে।

মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের বর্তমানে যে ২২ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেলের চাহিদা রয়েছে, তার মাত্র ১৫ শতাংশ পূরণ হয় স্থানীয় উৎপাদন থেকে; বাকি ৮৫ শতাংশ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। এই ৮৫ শতাংশের জোগান নতুন তেল ক্ষেত্র থেকে আসতে পারে।

তেল আমদানির ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ বিদেশী মুদ্রা ব্যয়ের কারণে পাকিস্তান চলতি হিসাবে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে। জ্বালানি আমদানিতে বিপুল ব্যয়ের কারণে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে পাকিস্তানের আমদানির পরিমাণ ১২.৯২৮ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।

পাকিস্তানের তেল রিজার্ভের সন্ধান যে শুধু তাদের জন্যই সুখবর হবে তা নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়াসহ চীন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্যও সেটা হবে সুখবর। মজুদ আবিষ্কারের ধারণা সত্য হলে, এই অনুসন্ধান দেশটির অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন অনেকটা দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে। যদি বড় ধরনের তেলের রিজার্ভ সত্যিই আবিষ্কৃত হয়, তাহলে বিদেশী বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে আরো বেশি। মার্কিন তেল কোম্পানি এক্সন মোবিল এবং ইতালির ইএনআই জানুয়ারি থেকে অতি গভীর এই তেলকূপ খননের কাজ করছে। আরো আন্তর্জাতিক কোম্পানি এই প্রকল্পে জড়িত হতে চাইবে যেখানে তেল অনুসন্ধান, পরিশোধন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ হবে। এই সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগগুলো পাকিস্তানকে তাদের প্রবৃদ্ধি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

চীনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের সাথে জ্বালানি নিয়ে উল্লেখযোগ্য বিনিময় রয়েছে চীনের। বড় ধরনের তেল রিজার্ভের সন্ধান পাওয়া গেলে চীনা কোম্পানিগুলো আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসবে। এ ধরনের সুযোগ পেলে সেটাকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান যাতে তাদের উন্নয়ন এগিয়ে নিতে পারে, সে জন্য তাদেরকে সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত চীন এবং এ জন্য যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাও তারা করবে।’

চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের (সিপিইসি) বিষয়টি শুরুতে ভাবা হয়েছিল মূলত তেল ও গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের জন্য। চীনের উত্তরাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ের উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সাথে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের সংযোগ স্থাপনের জন্য এই করিডোরের পরিকল্পনা হয়েছিল। পাকিস্তান যদি বড় ধরনের তেল রিজার্ভের সন্ধান পায়, তাহলে পাকিস্তানের পাইপলাইন ইরান ও ভারতে সম্প্রসারণের সুযোগ থাকবে। একই সাথে উপসাগরীয় দেশগুলো ও সৌদি আরবের সাথেও জ্বালানি সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জ্বালানি সংযোগ স্থাপিত হলে শুধু চীন নয়, পুরো অঞ্চলই এই অর্থনৈতিক বিকাশ থেকে লাভবান হবে। এই রিজার্ভ ব্যবহার করে বড় ধরনের মূলধনের প্রবাহ, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ, জ্বালানি বাণিজ্য এবং জনগণের পর্যায়ে বিনিময় বাড়ানো যাবে। এ অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে উন্নয়নপ্রবাহ দেখা যাবে। তেল রিজার্ভের ব্যবহার সেখানে সমন্বয় ও স্থিতিশীলতার পেছনে ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

গ্লোবাল টাইমসের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, পাকিস্তান তেল রিজার্ভের সন্ধান পেলে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর কাছেও তাদের আকর্ষণ বাড়বে। আর দ্বিপক্ষীয় বিভেদ সত্ত্বেও উচ্চ চাহিদার কারণে ভারত তখন পাকিস্তানের কাছ থেকে তেল আমদানি করবে। এশিয়ার ভূরাজনৈতিক চিত্র বহুদিন ধরেই যে জটিলতা এবং নড়বড়ে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সম্ভাব্য তেলের রিজার্ভ এ অঞ্চলের জন্য খেলা বদলকারী হয়ে উঠবে, জ্বালানি খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও বাড়বে। নিশ্চয়ই ভারত ও উপসাগরীয় দেশগুলো পাকিস্তানের সাথে জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগটি হাতছাড়া করবে না এবং এর মাধ্যমে এশিয়ায় তারা একটি জ্বালানি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে।
ইমরান খান তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় এক নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন পাকিস্তানবাসীকে। ‘নয়া পাকিস্তান’ সম্পর্কে ইমরান খানের প্রতিশ্রুতি দেশের অর্থনীতির সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ সে সম্পর্কে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

পাকিস্তানের ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিক্সের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির মুদ্রাস্ফীতি আগের ৮.২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯.৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য, জ্বালানি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধিতে পাকিস্তানিদের পারিবারিক বাজেটে টান পড়ছে। বিশেষত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, পাকিস্তানি রুপির অবমূল্যায়ন অব্যাহত রয়েছে। এক বছরে পাকিস্তানের মুদ্রা প্রায় এক-চতুর্থাংশ মূল্য হারিয়েছে। ভোক্তাদের দুর্দশায় আরো যোগ হয়েছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি। কয়েক দিন আগে পাকিস্তান সরকার পেট্রলের দাম লিটারপ্রতি ৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৮.৮৮ রুপিতে উন্নীত করেছে। এ ধরনের এক পরিস্থিতিতে ইমরান খানের সুখবরটি বাস্তবে শোনার প্রত্যাশায় থাকবে পাকিস্তানের জনগণ।

২০১৮ সালে দেশের ২২তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ইমরান খান। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রথম জাতীয় জয় ছিল এটি। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে ক্ষমতার হাতবদল হওয়ার পর প্রথম বিকল্প দল হিসেবে ক্ষমতায় আসে পিটিআই। ২০১৮ সালে পাকিস্তান সন্ত্রাসী সহিংসতাকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হলেও নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আগের সরকারের বেহিসাবি বিনিয়োগ গ্রহণের কারণে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য তীব্র চাপের মুখে পড়ে। ইমরান চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরসহ আগের সরকারের সময় নেয়া প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করেন। অনেক প্রকল্পের শর্ত পুনর্নির্ধারণও করেন।

প্রাথমিক দিনগুলোতে নতুন অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ইমরানের নতুন সরকার অস্বচ্ছতা প্রদর্শন করেছে বলে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। ইমরান খান শুরুতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে সমন্বয় ও পুনর্মিলন, সামাজিক-অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। প্রাথমিকভাবে তার দল পিটিআইর এসব কার্যকরভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা সম্পর্কে অনেকে প্রশ্ন উত্থাপন করে। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি এবং করের উচ্চহারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

লেনদেনের ভারসাম্য সঙ্কটের মোকাবেলায় এক সময় ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) সাথে আলোচনার কোনো বিকল্প দেখা যায়নি। আইএমএফের কঠোর শর্তের কারণে ইমরান নিজে এই সংস্থার ঋণ গ্রহণের সমালোচনা করেছিলেন আগে। শেষ পর্যন্ত তিনি বিকল্প উৎসগুলো থেকে অর্থ নিয়ে সঙ্কট সমাধানের চেষ্টা করে অনেকখানি সফল হয়েছেন। ইমরান খানের সরকার সহযোগিতা হিসেবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউইএ) এবং চীন থেকে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি নমনীয় ঋণ পেয়েছে। এর বাইরে রিয়াদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের বিলম্বিত পেমেন্টে তেল ক্রয় সুবিধা পেয়েছে। এতে সঙ্কট এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে।

অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের জন্য ইমরান সরকারের প্রধান কৌশলটি হলো পরবর্তী পাঁচ বছরে নি¤œ আয়ের পরিবারগুলোর জন্য ৫০ লাখ বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প। এটি নি¤œ আয়ের লোকদের জন্য বাসস্থান তৈরির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ৪০টি শিল্পের চাহিদা বাড়িয়ে ৬০ লাখ চাকরি তৈরি করবে। এ জন্য ১৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আনুমানিক ব্যয় হতে পারে, যা পাকিস্তানের জিডিপির অর্ধেকেরও বেশি। এই হাউজিং প্রকল্পের জন্য তহবিলের উৎস সম্পর্কে সরকারের মুখপাত্র স্পষ্ট কিছু বলেননি। তবে ধারণা করা যেতে পারে, এটি প্রধানত বেসরকারি খাত থেকে আসবে। একই সাথে সামাজিক প্রকল্প হিসেবে সরকার চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের উদ্যোগের মধ্যে এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।

ইমরানের নতুন সরকারের জন্য দেয়া আর্থসামাজিক প্রতিশ্রতি বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জের হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তেল ক্ষেত্র আবিষ্কারের সম্ভাবনা এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের জন্য নতুন এক সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। ২০১৯ সালের জিডিপি বৃদ্ধির হার ২০১৮ সালের ৫.৮ শতাংশের তুলনায় ৪.৮ শতাংশে নেমে যেতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। নতুন সম্ভাবনা অর্থনীতির বিকাশকে আরো সামনে এগিয়ে নিতে পারে। বৈদেশিক সম্পর্কে ব্যবস্থাপনার দু’টি পরীক্ষায় ইমরান উত্তীর্ণ হয়েছেন। পুলওয়ামার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান যেখানে যুদ্ধের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়, সেখানে ইমরান খান এক ধরনের বিজয়ের মধ্য দিয়েই এর শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। অন্য দিকে আরেক প্রতিবেশী আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কটের অবসান ঘটানোর কাছাকাছি চলে এসেছেন।

তেল ক্ষেত্র আবিষ্কারের বিষয়টি ইমরানের জন্য অনেকগুলো সম্ভাবনা তৈরি করবে। আর এতে ইমরান খান ‘নয়া পাকিস্তান’-এর যে স্বপ্ন জাতিকে দেখিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে যেতে পারবেন। এভাবে তিনি পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয় করার মতো আরেক ইতিহাসের নায়ক হয়ে থাকতে পারবেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top