‘হাফতারকে কোটি কোটি ডলার দিয়েছে সৌদি আরব’

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষের সামরিক কমান্ডার খলিফা হাফতারের ত্রিপোলি দখল অভিযান শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে তাকে এ অভিযানের জন্য কোটি কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শুক্রবার এ খবর জানায়। এ থেকে দেশটির সঙ্ঘাতে বিদেশী শক্তির হাত থাকার বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে।

সম্প্রতি সৌদি আরব সফরকালে হাফতারকে এই প্রতিশ্রুতি দেয় দেশটি। সফরকালে হাফতার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সৌদি গোয়েন্দা প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।

চার দশক ক্ষমতায় থাকার পর প্রেসিডেন্ট মোয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ও মৃত্যুর পর ২০১১ সাল থেকে লিবিয়ায় অস্থিতিশীলতা চলছে। শাসনতান্ত্রিকভাবে বিভক্ত লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত ঐক্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর গুরুত্বপূর্ণ বেনগাজী, বায়দা ও টোবর্ক শহরসহ পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা জেনারেল খলিফা হাফতারের নিয়ন্ত্রণে। হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স, মিসর, রাশিয়া ও সৌদি আরব। বছর তিনেক আগে দেশটিতে আরো কয়েকটি সরকার ছিল। কারো ওপর কারো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
কোনো কোনো বিদেশী শক্তি লিবিয়ার ভবিষ্যৎ এই কমান্ডারের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করছে তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সামরিক সঙ্ঘাত এড়ানোর জন্য হাফতারকে আহ্বান জানালেও তার বাহিনী তৎপরতা আরো জোরদার করেছে।

জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের লিবিয়া বিশেষজ্ঞ ওলফ্রাম ল্যাচার সাংবাদিকদের বলেন, হাফতার বিপুল বিদেশী সমর্থন না পেলে এভাবে অভিযান শুরু করতে পারতেন না। গত কয়েক মাসে প্রত্যেকেই তার ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল উল্লেখ করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্বন্দ্ব এড়াতে হাফতারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। অন্য সরকারগুলো তহবিল ও অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে তার শক্তি বাড়িয়েছে। তার লক্ষ্য হচ্ছে আগেভাগে দেশের ক্ষমতাকে কব্জা করা। বিদেশী যোগাযোগের উদ্দেশ্য শান্তির পথে উৎসাহ দান হলেও তারা দেশটির যুদ্ধবাজদের তোষণ করে থাকে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সৌদি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হাফতার রিয়াদ থেকে তহবিল গ্রহণ করেছেন। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেস ত্রিপোলিতে হামলা চালানোর পরপরই হাফতারের সাথে বৈঠক করে অপারেশন ত্যাগ ও জাতিসঙ্ঘ নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তার আহ্বান জানান। গুতারেস মন্তব্য করেন, তিনি দেশকে ভারী হৃদয় ও গভীরভাবে উদ্বেগ নিয়ে লিবিয়া ত্যাগ করছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top