দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, নুসরাতের মত যাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটে এর জন্য আমরা এই ঘটনাসহ সবগুলো নারী সহিংসতার কঠোর শাস্তি চাই। আজ ‘গণভবন থেকে বঙ্গভবন’ পর্যন্ত সিপিবি’র ডাকে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন।
তারা আরো বলেন, এ ঘটনার কঠোর শাস্তি দেয়া সরকারের জন্য একটি অগ্নি পরীক্ষা। নুসরাত হত্যাকা-ে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিয়ে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে দেশে আইনের শাসন আছে।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আজ বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি দিয়েছিল দলটি। এর পাশাপাশি একই সময়ে সারাদেশে জেলা-উপজেলার সমাজের সব স্তরের জনগণকে নিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশেরও ডাক দেয়।
এ কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজধানীতে মতিঝিলের রাজউক ভবনের সামনে মানববন্ধনে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন শেষ হবে না। আমরা উপযুক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবো। এ আন্দোলনে শুধুমাত্র সিপিবি’র না, এটা সব দলের আন্দোলন। তিনি সমাবেশ থেকে আগামী ২০-২৭ তারিখ পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সপ্তাহ পালনের ডাক দেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দল মত নির্বিশেষে এ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সপ্তাহ সভাই পালন করবে।
এ সময় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরো বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করতে দেয়া হয় নি। তখন সবাই পাকিস্তান আমলের জুলুম অত্যাচার শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছিল। আজ দেশকে নতুন করে অন্ধকারের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এদিকে আসাদ গেটের মানববন্ধনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা নুসরাত হত্যায় ন্যায়বিচার চাই। এ ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যাক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। এ ঘটনার কঠোর শাস্তি দেয়া সরকারের জন্য একটি অগ্নি পরীক্ষা। নুসরাত হত্যার কঠোর শাস্তি দিয়ে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে দেশে আইনের শাসন আছে।
আসাদ গেটের মানববন্ধনে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, টিআইবি, নারী পক্ষ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর, কৃষিবিদ ইউনিয়নসহ ১২-১২টি সংগঠন। মানববন্ধনে এ এল আর ডি এর নির্বাহী পরিচালক সামসুল হুদা বলেন, নুসরাতের বিচার করতে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তা যেন কথার কথা না হয়। নুসরাত হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আইনের শাসন দেখতে চাই। রাজনৈতিকভাবে তারা সরকার দলে বা বিরোধী দলে হোক না কেন আইনের আওতায় সবাইকে আনতে হবে।
অপরদিকে ২৭ নম্বর সড়কের মানববন্ধনে কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। নুসরাত হত্যার দ্রুত বিচারসহ পূর্বে এ ধরনের সবগুলো ঘটনার বিচার করতে হবে।
একই স্থানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের সংস্কৃতি হলো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে আমরা রাস্তায় নামি। তারপর এক সময় সব ঘটনাই ধামাচাপা পরে যায়, এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। নুসরাতের মত যাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটে এর জন্য আমরা এ ঘটনাসহ সবগুলো নারী সহিংসতার কঠোর শাস্তি চাই।