প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে কওমির দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা বাতিল ও স্থগিত

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠায় চলমান দাওরায়ে হাদিসের অনুষ্ঠিত সব পরীক্ষা বাতিল করেছে সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া। এছাড়া সামনের পরীক্ষাগুলোও স্থগিত করে পরীক্ষার নতুন তারিখ দেয়া হয়েছে। হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার নেতৃত্বাধীন ছয়টি বোর্ডের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আজ শনিবার সকাল ৭টায় ঢাকার মতিঝিলে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে দাওরায়ে হাদিসের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে জরুরি আলোচনা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এ বছর অনুষ্ঠিত পেছনের সব পরীক্ষা বাতিল এবং সামনের সব পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।

বৈঠকে পরীক্ষার নতুন তারিখও নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত মতে ২৩ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হয়ে ৩ মে শেষ হবে। উক্ত বৈঠকে প্রশ্ন ফাঁসরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন সংস্থার নেতৃবৃন্দ।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সদস্য মুফতি রুহুল আমিন, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা শামসুদ্দিন জিয়া, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু প্রমুখ।

উল্লেখ্য, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা গত ৮ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৮ এপ্রিল।

আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৬টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২৬ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

হাইয়াতুল উলইয়ার অধীনে ৬টি শিক্ষা বোর্ড হলো- বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশ, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ, আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তালিম বাংলাদেশ, তানজিমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশ এবং জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনে ‘কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল ২০১৮’ পাস হয়।

আইন পাস হওয়ার পরে সংস্থাটির অধীনে প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এর আগে অবশ্য ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ২০১৭ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করার পর হাইআতুল উলয়ার অধীনে ৬ বোর্ডের সম্মিলিত দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা ইতোপূর্বেও দুইবার (২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top