আসন্ন ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ১৮ এপ্রিল চূড়ান্ত দল ঘোষণার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আইসিসির বেঁধে দেওয়া সময় হচ্ছে ২৩ এপ্রিল। দল ঘোষণার যখন কয়েকদিন বাকি, তার পূর্ব মুহূর্তে খেলোয়াড়দের ফর্মহীনতা এবং ইনজুরির কারণে নির্বাচকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
মুশফিক, রুবেল, মিরাজ ও সাইফউদ্দিনের সঙ্গে নতুন করে ইনজুরিতে যুক্ত হলেন দলের অন্যতম পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ইনজুরির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সিনিয়রদের ফর্মহীনতা।
নিউজিল্যান্ড সফরে বলার মতো ভালো ফর্ম হয়নি কারোরই। যদিও বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সফর ছিল টাইগারদের বিশ্বকাপে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের অন্যতম সিরিজ। সেই সিরিজে টাইগরাদের পারফরম্যান্স ছিলো একদমই ফ্লপ। ছিল না কোন সান্তনার জয়ও।
নির্বাচক কমিটি খোলোয়াড়দের জন্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগকে (ডিপিএল) আয়ারল্যান্ড ও বিশ্বকাপের যাওয়ার আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে ধরে নিয়েছেন। লিগে ভালো করা ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের জন্য পছন্দ করা হবে। কিন্তু শেষ প্রস্তুতি কেমন হল টাইগারদের?
নিউজিল্যান্ড সফরে যারা অধারাবাহিক ছিলেন, ডিপিএলেও তারা তেমনই রইলেন। সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ মিথুনদের মতো দলের নিয়মিত ব্যাটসমনরা ফ্লপ।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) জাতীয় দলে ওপেনার সৌম্য সরকার ৮ ম্যাচে ২২.২৫ গড়ে করেন ১৭৮ রান। নেই কোন সেঞ্চুরি কিংবা হাফ সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ড সফরেও এই ব্যাটসম্যান ছিলেন না ছন্দে। সাব্বির রহমান কিউই সফরে একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও, ডিপিএলে ১০ ম্যাচে ২৭.১০ গড়ে করেন ১৯৪ রান। একটি ফিফটি ছাড়া বলার মতো আর কোন স্কোর নেই। মোহাম্মদ মিথুন ৫ ম্যাচে ২৫.৬০ করেন ১২৮ রান। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৪০ রানের। যারা বাংলাদেশ দলে নিয়মিত টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার সামলান তাদের ফর্মের এই অবস্থা।
অন্যদিকে, বোলারদের মধ্যেও নেই ছন্দ, অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এক ম্যাচে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। বাকি ৯ ম্যাচের ৬ ম্যাচেই ছিলেন উইকেটশূন্য। রুবেল হোসেন ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আগে ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ৭ উইকেট। চোট নিয়ে খেলতে থাকা সাইফউদ্দিন ছিলেন অন্যদের তুলনায় কিছুটা সফল। এই বোলার ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১২ উইকেট। এই ছয়জন ক্রিকেটার সবাই খেলেছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবহনীর লিমিটিডের হয়ে হয়ে।
জতীয় দলের অধিকাংশ তরকা নিয়ে গড়া আবাহনী লিমিটেড লিগে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে। যেটার প্রধান কারণ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফর্মে না থাক।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের দাবি, ‘নিউজিল্যান্ড সফরে খেলায়াড়রা ভালো করতে পারেনি। তবে এখানে আরো বেশি স্বচ্ছন্দ ও ভালো খেলা উচিত। তাদের কাছে যতটুকু প্রত্যাশা ছিল, সেটাও পূরণ করতে পারছে না।’
ক্রিকেটারদের ফর্মহীনতাকে বড় সমস্যা হিসেবেই দেখছেন আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘এটা বড় সমস্যা দলের জন্য। কারণ আয়ারল্যান্ড ও বিশ্বকাপে এরকম হলে জেতা কঠিন হবে। আশার কথা, লিগে আরো কিছু ম্যাচ রয়েছে; সেখানে হয়তো রানের ধারায় ফিরবে তারা।’
বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় যেখানেই খেলতে যাক না কেন, বিশেষ করে বিশ্বকাপে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী থাকতে হবে। ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের সাথে যদি রান এবং উইকেট থাকে, তাহলে সে আরো আত্মবিশ্বাসী ও ভালো অবস্থায় থাকে।’