মেসির নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন ম্যানইউর ডিফেন্ডার ক্রিস স্মলিং। ম্যাচের আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখে ছিলেন এই ডিফেন্ডার- মেসিকে যেভাবেই হোক তিনি আটকাবেন। আর সেই আটকানো যে হবে রক্ত ঝড়িয়ে তা হয়তো কারোর কল্পনাতেও ছিল না। তবে দলের প্রাণভোমরা আহত হলেও ম্যাচ হারেনি বার্সেলোনা। ম্যাচটিতে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার রাতে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাঠে নামে বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আগে থেকেই স্পটলাইট ছিল বার্সা তারকা লিওনেল মেসির উপর। ফর্মে থাকা মেসিকে আটকানোর ছক কষেছিলেন ম্যানইউর কোচ খেলোয়াড়রা। মেসি বলে কথা; কিন্তু সব ছক নিমিষেই ধুলিস্যাৎ করতে বেশি সময় লাগেনি এই এই জাদুকরের। সুয়ারেজকে দিয়ে গোল করিয়েছেন ম্যাচের শুরুতেই।
ম্যাচের ১২ মিনিটে সুয়ারেজকে বাড়ানো বল সুন্দরভাবেই হেড করে জালে পাঠান সুয়ারেজ, যদিও বল জালে জড়ানোর আগে ম্যানইউ তারকা লুক শয়ের শরীর স্পর্শ করে আত্মঘাতী গোল হিসেবে ধারণ করে এটি। প্রথমে অফসাইডের পতাকা উঁচু করে গোলটি বাতিল করে দেন রোফারি । পরে বার্সেলোনা আবেদন করলে, ভিএআরের সাহায্যে অফসাইড বাতিল করে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি।
পুরো ম্যাচ জুড়ে বার্সা ছিল ছন্দে। অন্যদিকে নিজ মাঠে পগবা-লুকাকুরা ছিলেন দিশেহারা। পুরো ম্যাচের দুই-তৃতীয়াংশ বল ছিল বার্সেলোনার দখলে। ম্যানইউর গোল পোস্টে বার বার আক্রমণ করে ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রেখেছেন বার্সার স্ট্রাইকাররা। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল বার্সার; কিন্তু সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কুতিনহো। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৫ মিনিটে আরেকটি সহজ গোল হাতছাড়া করেন সুয়ারেজ।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে মেসিকে রুখতে গিয়ে ম্যানইউর ডিফেন্ডার ক্রিস স্মলিং মেসির নাকে আঘাত করে বসেন। নাক থেকে ঝরে রক্ত। কিছুক্ষণের জন্য মাঠ ছাড়তে হয় মেসিকে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মেসিকে আঘাত করে, রক্ত ঝরিয়ে বার্সাকে কখনো হারাতে পারেনি কোন দল। সর্বশেষ, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মেসিকে আঘাত করে রক্ত ঝরিয়েছিলেন, রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস। আর সেটি ঘটেছিল রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো র্বানাব্যুতে। সেই ম্যাচে ৪-১ গোল ব্যাবধানে হারে রিয়াল।
বুধবারের ম্যাচের একই পরিণতি। ১২মিনিটে করা গোলটি আর শোধ করতে পারেনি ম্যানইউ। এই জয়ে ম্যানইউর মাঠে অধরা জয়ের খরা কাটল। দু’পক্ষ ১২ বারের মুখোমুখিতে ৪ ম্যাচ ড্র, ম্যানইউ জয় পায় ৩ ম্যাচে, এবং বার্সা জিতল ৫ বার।
এতে প্রতিপক্ষের মাঠে ১-০ ব্যবধানে জিতে নিজেদের উয়েফার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে অনেকটা পথ এগিয়ে রাখলেন মেসিরা। পরবর্তী লেগ ন্যু ক্যাম্পে নিজেদের মাঠেই হবে। ঘরের মাঠে যে বার্সা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামবে তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।